৯ বছর পর জামায়াতের মামলায় সাবেক এমপিসহ আসামী ৫৬ জন : গ্রেফতার-২
আসাদ খন্দকার শুক্রবার রাত ১০:৪৮, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও চুরির ঘটনায় ৯ বছর পর সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় ১৫০/১৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমীর মোঃ নুরুন্নবী প্রধান (৬৭)। তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের সোনাতোলা শাখইল গ্রামের মৃত ইসমাইল প্রধানের ছেলে।
মামলার আসামিরা হলেন – সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ (৬০), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল (৪৫), সাবেক মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি (৫৫), কামারদহ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তৌকির হাসান রচি (৩৮), সাবেক কাউন্সিলর শাহিন আকন্দ (৫২), কাইয়ুম মিয়া (৫০), এ.টি.এম. জয়নাল আবেদীন (৫০), মোঃ রাজু মিয়া (৪৫), উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক মুক্তার হোসেন সাদ্দাম (৩৪), শ্রী গোবিন্দ কুমার রাজভর (৬০), উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক মোঃ বাবুল ইসলাম (২৮), জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল হান্নান আজাদ (৫৫), সাবেক সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সরকারী মোঃ আতিকুর রহমান আতিক (৪২), সোহরাব (৫০), উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তাহিদুল ইসলাম রকেট (৫৭), নবাব প্রধান (৩৮), মোঃ মামুন সরকার (৩৩), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক মিয়া আসাদুজ্জামান হিরু (৫০), সাবেক কাউন্সিলর মাজেদুল ইসলাম (৪৫), শহিদুল ইসলাম কমেট (৫৫), মোঃ নান্নু মিয়া (৪৫), মো: আব্দুস সবুর (৩৮), মোঃ শাহিন (৪০), আল আমিন (২৮), মাজেদুল ইসলাম মাহিন (২৫), রাফসান জানি স্বর্নাফ (৩৬), জাহিদ (৩৫), এনামুল হক (৩৫), সুইট রানা (৩৫), মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (৩৬), হাজী মাহাতাফ (৫৫), পায়েল (২৮), আব্দুল মমিন (৩৫), আরিফুল ইসলাম (৩০), সাবেক কাউন্সিলর ফারুক কবির (৪৮), কামারদহ ইউপি সদস্য মিন্টু শেখ (৫০), সাজু মিয়া ওরফে কানা সাজু (৪১), মোঃ সবুজ (৩৩), মোঃ জহুরুল ইসলাম (৩২), মোঃ খাইরুল ইসলাম মুক্তার (৫০), মোঃ ওয়ারেজ সরকার (৩০), অলিউর রহমান অলি (৩৫), মোঃ রাগেবুল ইসলাম (২৭), হোসাইন আহম্মেদ (৬০), মোঃ শিহাব সরকার রঞ্জন (২৭), মোঃ আব্দুল হাই তালুকদার (৬৫), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন আহবায়ক মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৫), মোঃ বিপু সরকার (৩৮), আব্দুর রাজ্জাক (২৭), মোঃ আইয়ুব আলী (৫৫), মোঃ রেজাউল করিম (৩৫), মোঃ মিঠু শেখ (৪০), মোঃ মামুন তালুকদার (৩২), মোঃ মিঠুন তালুকদার (২৮)। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, তাঁতিলীগ ও ছাত্রলীগের ৫৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৫০ থেকে ১৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি বিকাল আনুমানিক সোয়া ৫টার দিকে উল্লেখিত নামধারী আসামিগণসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০/১৬০ জন আসামি গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের গরুহাটি থেকে লাঠিসোটা, লোহার রড, কুড়াল, শাবল, ছুরি, ছোড়া, চাইনিজ কুড়াল, রামদা, বেকি, হাসুয়া, হকিস্টিক, ককটেল, পেট্রোলসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পশ্চিম চারমাথায় অবস্থিত গোলাপবাগ দারুল ফোরকান ট্রাস্ট ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ের সামনে এসে ১নং আসামি সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে ৫ থেকে ৯ নং আসামির নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র একত্রিত করে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। এতে উক্ত কার্যালয়ে থাকা ৫টি মোটরসাইকেল, অসংখ্য বই ও আসবাবপত্র পুড়ে ভস্মীভূত হয়। যার মোট আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীসহ স্থানীয় লোকজন তাদের বাধা দিতে গেলে ১ থেকে ১০ নং আসামি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করলে সকল আসামি মিলে অফিসের গেইট, স্টিলের দরজা, ৬টি জানালা, ৩০ বান টিন, ৫ জন স্টিলের এঙ্গেল, ৩০ হাজার ইট, ৮টি স্টিলের আলমারি, ৬টি স্টিলের টেবিল, ১৫টি ফ্যান, ১৫০টি চেয়ার, ২টি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফটোকপি মেশিন, প্রিন্টার, টিউবওয়েল ও মোটর পাম্প চুরি করে নিয়ে যায়। যার মোট আনুমানিক মূল্য ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
মামলার বাদী মোঃ নুরুন্নবী প্রধান বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে তৎকালীন ওসি মামলা নেয়নি। বিষয়টি সাংগঠনিক হওয়ায় ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে মামলা করতে দেরি হয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন,এই মামলায় অজ্ঞাতনামা দুইজন রাজু ও মোশারফ হোসেন শিবলু গ্রেফতার হয়েছে,২০১৫ সালে জামায়াতে ইসলামীর অফিসে অগ্নিসংযোগ ও চুরির অভিযোগে মামলা হয়েছে। যার মামলা নং ২৭, তারিখঃ ২৩/১০/২০২৪ ইং এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামিরা আত্মগোপনে আছেন।