চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজাবাবু, ৪০ মনের দেহের দাম ১৮ লক্ষ টাকা
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন মঙ্গলবার সকাল ১০:৪৮, ২০ জুন, ২০২৩
আর কয়েকদিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা কোরবানির ঈদ। আর তাই প্রতিবছরের মতো এবারো জেলায় বিভিন্ন খামারসহ ব্যাক্তিগতভাবে অনেকে পালন করেছেন বিভিন্ন জাতের গরু, ষাঁড়, ছাগল ও ভেঁড়া। এরই অংশ হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় কোরবানি উদ্দেশ্যে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় ‘রাজাবাবু’। উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের হাজারবিঘি চাঁদপুর গ্রামের প্রান্তিক খামারি ও সাবেক ইউপনিয়ন পরিষদ সদস্য জুলফিকার আলী হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি লালন-পালন করছেন গত এক বছর ধরে। আর এই ষাঁড়টির দাম হাঁকা হয়েছে ১৭ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা। তবে স্থানীয় বাজারে কাংক্ষিত দাম না পেলে ষাঁড়টিকে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হবে চট্টগ্রামের কোরবানির হাটে।
কিন্তু কেন রাজাবাবু নাম রাখা হলো ? এমন প্রশ্নের জবাবে ষাঁড়টির মালিক খামারি জুলফিকার আলী বলেন, ষাঁড়টি হাঁটা-চলায় নম্র-ভদ্র এবং খাওয়া-দাওয়ায় নাজুক প্রকৃতির হওয়ায় তার নাম রাখা হয়েছে রাজাবাবু। কারণ প্রাকৃতিক উপায়ে কোনো প্রকার ওষুধ ছাড়াই লালন-পালন করা হচ্ছে ষাঁড়টিকে। আর প্রতিদিন রাজাবাবুর পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। কেননা রাজাবাবুর খাবারে মেন্যুতে প্রাকৃতিক খাবারের পাশাপাশি রয়েছে কলা, আপেল, কমলা, বেদানা ও মৌসুমি ফল আম। তবে লম্বা ও উচ্চতায় রাজাবাবুর ওজন প্রায় ৪০ মণ হওয়ায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এই ষাঁড়ের দাম ১৭ লক্ষ থেকে ১৮ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজাবাবুকে দেখতে খামারী জুলফিকারের বাড়িতে প্রতিদিন ভিড় করছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেক মানুষ। তারা জানান, শুধু হাজারবিঘি গ্রামের নয়, সমগ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জে এত বড় ষাঁড় চোখে পড়েনি। এটা যেন একটা ছোটখাটো সুর ছাড়া হাতি।
জুলফিকার আলী বলেন, গত বছর কোরবানিতে সম্রাট নামের একটি কালো রঙের ষাঁড় লালন-পালন করেছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় এই বছর পালন করি রাজাবাবুকে। কোরবানির ঈদকে ঘিরে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারেরা ষাঁড়টি দেখতে আসছে। একেকজন একেক রকম দাম বলছে। তবে কাংক্ষিত দাম এখন পর্যন্ত কেউ বলেনি। আর তাই স্থানীয়ভাবে দাম না পেলে সন্তান তুল্য রাজাবাবুকে নিয়ে যাবো চট্টগ্রামের হাটে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খামারি জুলফিকার আলীকে দপ্তর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। তার দেখে যেন অন্য খামারিরা যেন উৎসাহ পান সে লক্ষ্যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।আর রাজাবাবু জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ষাঁড় হওয়ায় ষাঁড়টিকে বিক্রির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আরও বলেন জেলায় এ বছর রাজাবাবুর পাশাপাশি ১ লাখ ৭৭ হাজার গবাদি পশু ঈদকে সামনে রেখে খামারিরা লালন-পালন করছে।