চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপনির্বাচনে নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মঙ্গলবার সকাল ১১:৪০, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ সদর আসনের উপ-নির্বাচনে সরকার দলীয় নৌকা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আপেল প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। গত ২৯ জানুয়ারী রোববার রাত ২টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বালুবাগান ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লাখরাজপাড়ার নৌকার নির্বাচনী অফিসে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আব্দুল ওদুদ।
এ দিকে, একই দিন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে পৌর এলাকার বাতেন খাঁর মোড় অবস্থিত প্রধান নির্বাচনী অফিসসহ উদয়ন মোড়, রেলগেট, বিদিরপুর, উদয় সংঘ মোড় ও ফুড অফিস মোড়ের অফিস ভাংচুর করার অভিযোগ করেছেন আপেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন। এ নিয়ে সোমবার ৩০ জানুয়ারী বিকেলে তার প্রধান নির্বাচনী অফিসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
এ সময় আপের প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হল লিটন অভিযোগ করে বলেন, রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মটরসাইকেল যোগে ২০-২২ জন সন্ত্রাসী এসে অতর্কিতভাবে প্রধান নির্বাচনী অফিসে হামলা চালায়। এ সময় তারা কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিলসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ভাংচুর করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এছাড়াও রেলগেট মোড়ের নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি৷
স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন আরও বলেন, আমার ১৫টি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন এটা করেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীরা ভাংচুরকারীদের নাম বলেছে। আমি বিশ্বাস রাখতে চাই, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
তবে এ ব্যাপারে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, পরাজয়ের আশঙ্কা জেনে ভোটারদের সমর্থণ ও সহানুভূতি পেতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটনের কর্মী-সমর্থকরা নিজেদের অফিসে নিজেরাই ভাংচুর চালিয়েছে। আর নাম দিচ্ছে সরকার দলীয় নেতা কর্মীদের। নৌকার দুটি অফিসে অগ্নিসংযোগ ও কয়েকটি অফিসে ভাংচুরের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমাদের অভিযোগ দেয়ার পরেই ও দিনদিন আপেল প্রতীকের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে ও এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে। আশা করি, আইন-শৃংখলা বাহিনী তদন্ত করলেই এর সঠিক বিষয় উদঘাটন হবে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ সদর আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন জানান, নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পাওয়ার পরই জেলা জুড়ে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি কঠোর করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের ঘটনায় খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছিল। জেলা জুড়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ আচরণবিধি তদারকি করতে মাঠে কাজ করছেন। নির্বাচনে এ রকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। তবে আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।