অভাবের সাথে যুদ্ধ করেই চলছে নয়নের ২০ বছর
মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদীঘি, বগুড়া শনিবার রাত ০৮:৩৮, ২৫ জুলাই, ২০২০
দিনের প্রথম প্রহরে বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন এলাকায় শোনা যায় ‘‘এই রসমালাই, প্যারা সন্দেশ, ক্ষীরসা’’ তারপর এভাবেই চলবে নয়ন ঘোষের সারাদিন। সন্তাহার পৌর ও ইউপি এলাকায় প্রায় ২০ বছর থেকে কাধে ভার নিয়ে ভ্রম্যমান ভাবে রসমালাই, প্যারা সন্দেশ, ক্ষীরসা বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করছে নয়ন ঘোষ।
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার ঘোষপাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নয়ন ঘোষ (৩২) পিতাঃ সুজিত চন্দ্র ঘোষ। অভাবের তাড়নায় ১২ বছর বয়স থেকেই কাধে ভার নিয়ে নয়ন ঘোষ জীবিকার খোজে প্রথম প্রহরে চলে আসেন সান্তাহারে । জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার ঘোষপাড়া গ্রামে বসবাস করেন নয়ন ঘোষ পিতাঃ সুজিৎ ঘোষ। তিন সহদোর ভাইয়ের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ নয়ন ঘোষ। নয়ন ঘোষের এক ছেলে এক মেয়ে। নয়ন ঘোষের মেয়ে বর্তমানে প্রথম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত এবং ছেলের বয়স দুই বছর। অভাব অনটনের মাঝে বেড়ে ওঠে নয়ন ঘোষ, শৈশব থেকেই চরম অভাব-এর মাঝে পড়েন নয়ন ঘোষের পরিবার।
ঘোষ পরিবারের সন্তান হওায়ায় পারিবারিক ভাবেই মিষ্টান্ন তৈরীর কাজ জানতেন নয়ন ঘোষ। সেই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ১২ বছর বয়স থেকে কাঁধে ভার নিয়ে জীবিকা নির্বাহে বেড়িয়ে পড়েন নয়ন ঘোষ, সেই থেকেই চলছে তার অভাবের সাথে যুদ্ধ, এই অভাবের তারনায় প্রাথমিক শিক্ষার গন্ডিটিও পেরিয়ে যেতে পারেনাই। এই যুদ্ধের সাথেই কেটে গেল নয়নের ২০টি বছর। সান্তাহারে নয়ন ঘোষের মিষ্টানের রয়েছে বেশ সুখ্যাতি। বর্তমানে কিছুটা স্বচ্ছলতার মুখ দেখলেও সন্তানদের ভরনপোষন নিয়ে রয়েছে কিছুটা দুশচিন্তায়।
নয়ন ঘোষ আজও স্বপ্ন দেখেন নিজের একটি দোকান দেবার, ছুটে চলেছেন তার স্বপ্নের পথে। সমাজে এমন নয়ন ঘোষের সংখ্যা অনেক, তাদের গল্পগুলোও ভিন্ন। উপযুক্ত সাহায্য পেলে এমন নয়ন ঘোষারাও সমাজে চমৎকার কিছু করে দেখাতে পারে,যার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সমাজের বিত্তবানদের।