ঢাকা (দুপুর ২:৩০) মঙ্গলবার, ১৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News সিলেট নগরীতে ভোর বেলায় ঝটিকা মিছিলের মূল হোতা ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার Meghna News অসুস্থ রেজওয়ানুল ইসলাম রায়হানের শয্যাপাশে দুধরচকী Meghna News গৌরীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অটোরিকশা চালক নিহত Meghna News ফতুল্লায় গ্রেফতার হওয়া স্বপনের মুক্তির দাবিতে গৌরীপুরে মানববন্ধন Meghna News ৮১ বছর পর কুমিল্লা থেকে নিজ দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ২৪ সেনার দেহাবশেষ Meghna News সিলেট নগরীতে ভোর বেলায় হঠাৎ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধুর ঝটিকা মিছিল Meghna News গৌরীপুর মহিলা কলেজে নবীনবরণ ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত Meghna News সিলেটে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের মাঝে নাভিশ্বাস Meghna News সাইফুল প্রধানের হাতের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে ঢাকারগাঁও গ্রামের সমাজব্যবস্থা ও উন্নয়নচিত্র Meghna News বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা প্রতিদিনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

সাজেকের চেয়ে ” সুন্দর মারায়ংতং পাহাড়” আলীকদম

বিনোদন ২৩৪১১ বার পঠিত

মোঃ কামরুজ্জামান মোঃ কামরুজ্জামান Clock শুক্রবার রাত ১১:০৮, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা, বান্দরবান প্রতিনিধিঃ বান্দরবানের আলীকদমে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬৬০ ফুট ওপরে দাঁড়িয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা কেবলই রোমাঞ্চকর নয়, বরং সেখানে চ্যালেঞ্জটাই মুখ্য। পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার তীব্র লালসায় নিজেদের ধরে রাখতে না পেরে আমরা চারজন চলে যাই বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার মারায়ংতং জাদি পাহাড়ে। এটির সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতে আমাদের হাঁটতে হয়েছিল প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাহড়ি রাস্তা। যেখানে কোথাও এক ফুটের জন্য রাস্তা নিচের দিকে নামেনি! ট্রেইলের শুরু থেকে একদম চূড়া পর্যন্ত পুরোটাই খাড়া রাস্তা। অতবড় একটা পাহাড়ের চূড়ায় কেবল চার জন কিশোরের ক্যাম্পিং করাটা অনেকটা দুঃসাহসিক দেখাচ্ছিল। সেদিন আমরাই সর্বপ্রথম চূড়ায় উঠেছিলাম। তবে কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে ১২ জন এবং ৯ জনের দুটি দল যথাক্রমে চূড়ায় আসতে দেখে কিছুটা সাহস পেলাম। বৃষ্টির বাগড়া মাথায় নিয়ে সম্পন্ন করতে হলো তাবু টানানো।

‘মারায়ংতং’: ‘মারাইংতং’, ‘মেরাইথং’ বিভিন্ন নামেই ডাকা হয় এই পাহাড়কে। চূড়ায় উঠেই যেটা সবার প্রথমে চোখে পড়ে, তা হল বিশাল একটি জাদি। জাদি মানে বৌদ্ধদের পূজা-অর্চনার জন্য বানানো বুদ্ধমূর্তি। এমনভাবে জাদিটি বানানো যেন সে দূর কোনো প্রান্তের দিকে তাকিয়ে প্রকৃতির রহস্য নিয়ে ভাবছে আর স্মিত হাসি ফুটে উঠছে তার ঠোঁটে। জাদির চারদিকে খোলা ও ওপরের দিকে চালা। পাহাড়টির ওপরের অংশটুকু সমতল। এখান থেকে যত দূর দৃষ্টি যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। সেসবের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে জনবসতি। নিচে সাপের মতো এঁকে-বেঁকে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী। তার দুই কূলে দেখা যায় ফসলের ক্ষেত। এ পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন আদিবাসীর বসবাস। এদের মধ্যে ত্রিপুরা, মারমা ও মুরং অন্যতম। এই পাহাড়ের নিচে থাকে মারমারা। আর পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে মুরংদের পাড়া। এরা পাহাড়ের ঢালে তাদের বাড়ি বানিয়ে বসবাস করে। মাটি থেকে সামান্য ওপরে এদের টংঘর। এসব ঘরের নিচে থাকে বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন-গরু, ছাগল, শূকর ও মুরগি। কখনো গবাদি পশুর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠও রাখা হয় স্তূপ করে

মারায়ংতং-এ ক্যাম্পিং: বিকেল বেলা সূর্য যখন পাহাড়ের কোলে ঘুমিয়ে যাচ্ছিল, প্রকৃতির অনন্য একটা রূপের দেখা পেলাম আমরা। মনে হচ্ছিল পাহাড় নিজের ছায়াতলে খুব সযত্নে আলতো করে সূর্যটাকে লুকিয়ে রেখে দিচ্ছে। বিকেলের স্নিগ্ধ আলো আর সন্ধ্যার রক্তিম আকাশের মিষ্টি একটা পরিবেশ পাহাড়ের চূড়ায় থাকা সবাইকে গভীরভাবে আলিঙ্গন করে নিচ্ছে। চারিদিক স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে আর চূড়ায় থাকা আমরা সবকিছুকে খুব গভীরভাবে অনুভব করছি, খুব কাছ থেকে প্রকৃতির হিংস্র রূপ দেখে আসা আমরাই আবার প্রকৃতির করুণা উপভোগ করছি। আমার কাছে মনে হল সাজেকের চেয়েও সুন্দর মারায়ংতং! কিছু সময় পর আঁধার ঘনিয়ে এল। পাহাড়ের চারপাশে তখন মেঘেরা বাসা বাঁধতে শুরু করলো। তুলার চেয়েও নরম মেঘগুলোর রূপ এতটাই সুন্দরভাবে ফুঁটে উঠছিল, আমরা ক্রমেই অভিভূত হচ্ছিলাম। আর তখন ছবি তোলার ইচ্ছে কারোই ছিলনা। শুধুমাত্র উপভোগ করতে ইচ্ছে হচ্ছিল পরিবেশটাকে। রাতে অসহনীয় শীত শুধু ক্যাম্প ফায়ারই দূর করতে পারে। রাতের আকাশে সুবিন্যস্ত তারকারাজির অমায়িক একটা দৃশ্য ক্রমশই আমাদের ভুলিয়ে দিতে থাকলো দিনের বেলার সকল পরিশ্রম, ভয়াবহতা, ক্লান্তি–গ্লানিকে। তাবুর ছাদ খুলে দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা জিনিসই বারবার চাইছিলাম, সকাল যেন না হয়!

নির্দেশনা: ঢাকা থেকে চকরিয়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে চান্দের গাড়ি দিয়ে আলীকদম যাওয়ার পথে আবাসিকে নেমে যাবেন, ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৬০ টাকা করে। আবাসিকে নেমে ডান পাশের রাস্তাটা ধরে হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন আলীকদমের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মেরাই থংয়ে। সেখানে খাবার ও পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, কাজেই শুকনো খাবার ও পানি সমতল থেকেই নিয়ে যেতে হবে।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT