লোহাগড়ায় ঈদ-উল আজহায় ভিজিএফ চাল বঞ্চিত ২৪০ পরিবারের মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিনিধি রবিবার দুপুর ০২:২৫, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
দুর্নীতিবাজ খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবার দাবি
ইকবাল হাসান, নড়াইল প্রতিনিধি: ঈদ-উল আজহায় ভিজিএফ এর চাল বঞ্চিত অসহায় দরিদ্র ২৪০ পরিবার চাল পাবার দাবিতে ও দুর্নীতিবাজ খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মানববন্ধন করেছে। শনিবার(৩১আগষ্ট) বিকাল ৩টায় নড়াইলের লোহাগড়ার কাশিপুর ইউনিয়নের কাশিপুর বাজারে ক্ষতিগ্রস্থ ভিজিএফ এর কার্ডধারীরা এ মানববন্ধন করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঈদ-উল আজহার পূর্বে কাশিপুর ইউনিয়নে ২ হাজার ৭শত ৭০টি পরিবারের জন্যে ৪১ হাজার ৫শত ৫০ কেজি চাল(মাথা প্রতি ১৫ কেজি) বরাদ্দ দেয়া হয়।
চেয়ারম্যান অসুস্থ থাকায় উক্ত ভিজিএফ এর চাল উত্তোলন ও বিতরণের জন্যে ৪ আগষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বর মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ শেখকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ৮ আগষ্ট এমপির প্রতিনিধি, ট্যাগ অফিসার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্তিতিতে চাল বিতরণ শুরু হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে ইউনিয়নের চালিঘাট ও গন্ডব এলাকায় দুদল গ্রামবাসীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়।
চেয়ারম্যান তখন ইউএনও এবং লোহাগড়া থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেন। গোলযোগের আশংকায় চালিঘাট,গন্ডব গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের ২৪০ পরিবার চাল নিতে আসতে পারেননি।
চালিঘাট,গন্ডব এলাকার গোলযোগ মিমাংসার পরে ১০আগষ্ট সরকারি খাদ্য গুদামে থাকা কাশিপুর ইউনিয়নের ১৭ হাজার ৫শত ৫০ কেজি চাল ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত (ভিজিএফ) মেম্বর মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ
শেখ আনতে গেলে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কামরান হোসেন ১৩ হাজার ৯শত ৫০ কেজি চাল প্রদান করেন। অবশিষ্ট ৩হাজার ৬শত কেজি চাল প্রদান করেননি। ফলে ২৪০ পরিবার চাল না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। ২৪০ পরিবার চাল না পাবার বিষয়টি চেয়ারম্যান মোঃ মতিয়ার রহমান খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসিক, দূর্নীতি দমন কমিশন সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে অবহিত করেন।
মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্থ কার্ডধারী কাশিপুর গ্রামের আয়শা বেগম(৪৫),এড়েন্দা গ্রামের শিউলী(২৫) অভিযোগ করে বলেন,খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা আমাদের ২৪০ জনের চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই আমরা ঈদে চাল বঞ্চিত হয়েছি। দোপাদহ গ্রামের বাসিন্দা রনি মোল্যা বলেন, দুর্নীতিবাজ খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা চাল চুরি করে ধরা পড়েছেন। আমরা খাদ্যগুদামের কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এদিকে,কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বররা শুক্রবার বিকাল ৪টায় কাশিপুর বাজারস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা কাশিপুর ইউনিয়নের ২৪০ পরিবারের চাল আমাদের প্রদান করেননি। বরং কালোবাজারে চাল বিক্রি করেছেন। ঈদের আগে ৯আগষ্ট পাচারকালে পুলিশ ১২০ বস্তা(৩হাজার ৬শত কেজি) চালসহ দুজন নসিমন ড্রাইভারকে আটক করে। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বর
রবিউল।
খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা মোঃ কামরান হোসেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আগে কাশিপুর ইউনিয়নের চাল যে ভ্যানগাড়ি চালক নিয়েছিলেন সেই ভ্যান চালককেই চাল দিয়েছিলাম।
দেবার আগে চেয়ারম্যান ফোনে আমার সাথে কথাও বলেছিলেন।
কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মতিয়ার রহমান এ বিষয়ে বলেন, পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বর মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ শেখকে ভিজিএফ এর চাল উত্তোলন ও বিতরণের দায়িত্ব প্রদান করেছিলাম। খাদ্য গুদামের দুর্নীতবাজ কর্মকর্তা ৩ হাজার ৬শত কেজি চাল না দেয়ায় ২৪০ দরিদ্র পরিবার ঈদ-উল আজহায় চাল বঞ্চিত হয়েছে । ঈদের আগে চালসহ আটক সেই নসিমন ড্রাইভার কামরুল শেখ ও রিয়াজ বলেন, খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা আমাদের কে বলেছিলেন চাল ব্যবসায়ি সাহাবুলকে ওই চাল দিতে।