দেশে প্রথম প্রিপেইড ‘প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড’ তৈরি হচ্ছে সিলেটে
ইবাদুর রহমান জাকির,সিলেট শুক্রবার রাত ১০:২৯, ৬ নভেম্বর, ২০২০
সিলেটে দেশের প্রথম প্রিপেইড ‘প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা। লাক্কাতুরায় অবস্থিত সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশেই এ গ্রাউন্ডটি তৈরি করা হচ্ছে। ৩ একর জমিতে গড়ে তোলা হবে একটি পরিপূর্ণ প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড।
যেখানে একই সঙ্গে ৬০ ক্রিকেটার, কিংবা তিনটি দল অনুশীলন করতে পারবে। থাকবে আন্তর্জাতিক মানের সুবিধাও। শুধু তাই নয় নব নির্মিত আউটার স্টেডিয়ামটিকে আন্তর্জাতিক করার জন্য আবদেনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন।
নাদেল বলেন, ‘দেখেন খেলা তো প্রতিটি স্টেডিয়ামেই হয়। কিন্তু ক্রিকেটার বা বিভিন্ন ক্লাব ও দলগুলোর জন্য অনুশীলন সুবিধা তেমন নেই। ধরেন বিপিএলে এখানে অনেক দল খেলতে আসে। তাদের অনুশীলন সুবিধা আমরা দিতে হিমশিম খাই। সেই চিন্তা থেকেই আমরা একটি প্রাকটিস গ্রাউন্ড তৈরির চিন্তা করেছি।’
জানা গেছে মূলত এই প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডটি তৈরির উদ্যোগ ও প্রাথমিক কাজগুলো করবে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা। তবে এর বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
তবে ভিতরে উইকেট ও অবকাঠামোর কাজ উন্নয়ন করে দিবে বিসিবি। এ বিষয়ে নাদেল বলেন, ‘দেখেন আমরা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ভূমি নেয়ার কাজটি করছি। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এর বাউন্ডারির দেয়াল, মাটি ভরাট ও অন্যান্য কাজগুলো করবে। তবে বিসিবি এই অনুশীলন মাঠের অবকাঠামো, উইকেট ও সুবিধাগুলো তৈরি করে দিবে। মানে আমরা তিনটি প্রতিষ্ঠান মিলেই এই গ্রাউন্ড তৈরির কাজটি করবো।’ দলগুলো অনুশীলন করতে এসে কী সুবিধা পাবে তা নিয়ে নাদেল বলেন, ‘আমরা এখানে ৮টি সিমেন্টের উইকেট তৈরি করে দিবো। এছাড়াও থাকবে আরো ১০ বা ১২টি উইকেট। থাকবে চেঞ্জ রুম, টয়লেট ও ওয়াশ রুম ও পানির ব্যবস্থা। যেন ক্রিকেটাররা অনুশীলন করতে এসে এখানেই নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে।’
তবে এমন সুবিধাগুলো ফ্রি পাওয়া যাবে তা ভাবলে হবে না। যে দলগুলো এখানে অনুশীলন করতে আসবে তাদের একটি নুন্যতম ফি দিতে হবে। এই ফি নেয়ার কারণও আছে বলে জানিয়েছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তিনি বলেন, ‘আমরা ঠিক করেছি যারা এই গ্রাউন্ডে অনুশীলন করতে আসবে তাদের একটি নুন্যতম ফি দিতে হবে। সেটি খুব বেশি হবে, তা নয়। এই অর্থ নেয়ার কারণও আছে। সেটি হলো মেনটেন্যান্স। যেমন উইকেট পরিচর্যা, টয়লেট, চেঞ্জ রুমগুলোর দেখভাল। এটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজগুলো নিয়মিত করতে হবে। যার জন্য অর্থ ব্যয় হবে। যার জন্য আমরা চাইছি গ্রাউন্ডটি কারো ওপর নির্ভর না করে স্বনির্ভর হোক। এখান থেকে আসা ভাড়া দিয়েই যেন কাজগুলো হয়।’
সিলেট পাচ্ছে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম।বাংলাদেশের ৭ টি আন্তর্জাতিক মাঠের মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। গত কয়েক বছর ধরেই এর পাশে নির্মাণ হচ্ছে আরেক অপরূপ আউটার স্টেডিয়াম। যার অবকাঠামোগত কাজ এখন প্রায় শেষ। শুধু মাঠে মাটি ফেলা ও ঘাস লাগানোর অপেক্ষা। তবে এইটি আর আউটার স্টেডিয়াম থাকছে না। নতুনভাবে এর নামকরণ করা হচ্ছে সিলেট গ্রাউন্ডস-২। শুধু তাই নয় এটিকে করা হবে আন্তর্জাতিক। এরই মধ্যে আইসিসির কাছে অনুমতি চাওয়ার প্রক্রিয়াগুলো শুরু করেছে বিসিবি। এ বিষয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘আমরা আউটার স্টেডিয়ামের কাজ শেষ করে এনেছি। তবে এটিকে আর আউটার স্টেডিয়াম বলা হবে না। এরই মধ্যে আমরা এটি সিলেট গ্রাউন্ড-২ নামকরণ করেছি। আর এটি যেন আন্তর্জাতিক করা হয় সেটির জন্য আইসিসির কাছে অনুমোদন চাওয়ার প্রক্রিয়াগুলোও শুরু করেছি।’
অন্যদিকে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম-১ এর নামে আসছে পরিবর্তন। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পরিবর্তে এটি হবে শুধু সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এরই মধ্যে নাম পরিবর্তনের আবেদন করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন নাদেল।