সুনুই জলমহালে এক মৎস্যজীবীকে জবাই করে হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) বুধবার রাত ১০:৪৮, ১৬ জুন, ২০২১
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় শ্যামাচরণ বর্মন (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ জেলেকে গলা কেটে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে সিলেট পিবিআইয়ের একটি টিম মাহবুব আলম রিপন (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে মঙ্গলবার গভীর রাতে তার নিজ বাড়ির সামনের সড়ক থেকে গ্রেফতার করেছে। তার বাড়ি উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই গ্রামে। গত ৭ জানুয়ারি উপজেলার সুনই জলমহালে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নেন মনাই নদী প্রকাশিত সুনই জলমহালটি জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন।১৪২২বঙ্গাব্দ থেকে ১৪২৭বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ছয় বছরের জন্য এটি ইজারা পায় সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। ওই সমিতির সভাপতি চন্দন বর্মণ যথারীতি জলমহালটির খাজনা পরিশোধ করেন।তিনি তাদের সমিতির সদস্যদের বসবাস ও অন্যান্য কাজের জন্য জলমহালের পাড়ে খলাঘরসহ পাঁচটি ঘর নির্মাণ করে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছিলেন। একই সমিতির সভাপতি দাবি করে স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে রতনের আপন ছোট ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রতনের অনুসারী সুবল বর্মন (৩০)দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দুই শতাধিক লোকজন নিয়ে গত ৭জানুয়ারি রাত আটটার দিকে সুনই জলমহালে চন্দন বর্মনোর খলা ঘরে হামলা চালিয়ে তাদের দুটি খলাঘর আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সেখানে থাকা জেলেদেরকে মারধর করে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য শ্যামাচরন বর্মনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ধর্মপাশা থানায় ৯জানুয়ারি সাংসদ মো্য়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ছোট ভাইকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নিহত শ্যামাচরণ বর্মনেন ছেলে চন্দন বর্মন। কিন্ত অভিযোগে সাংসদের নাম থাকায় এটিকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি পুলিশ।
পরে ১০জানুয়ারি রাতে থানার এসআই আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা ৬০-৬৩জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। তবে সাংসদ ও তার পরিবারের কোনো সদস্য জড়িত নয় বলে ঘটনার পর থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই সিলেট কার্যালয়ের এসআই তারেকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,ধর্মপাশার সুনই জলমহালে মৎস্যজীবী শ্যামাচরণ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মামলাটি গত ৬ মার্চ থেকে আমরা তদন্ত করছি।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মাহবুব আলম রিপন (৪৮)কে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।