ঢাকা (রাত ৪:২৮) শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

সাঘাটা ও ফুলছড়ির ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, অতিক্রম করল ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর বিপদসীমা



ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, করতোয়াসহ সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত আছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ২৪ ঘন্টায় ২০.৮৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার উপরদিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে করতোয়া কাটাখালি বাঙ্গালী ও যমুনা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে।

জেলা প্রশাসন এখনো পানিবন্দি পরিবার বা মানুষের তথ্য না জানালেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটাতে ১৫ টি গ্রাম, ফুলছড়িতে ১৫ টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার ধকল কাটতে না কাটতেই এই দুই উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ফের পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জানাগেছে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ বন্যা আতঙ্কে আছে। বন্যায় এদিকে পানি বৃদ্ধি পেলে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর ঘেঁষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি পানির তোড়ে চরম হুমকির মুখে পড়ছে। ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

এ উপজেলার প্রায় ১৫ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আতিকুর রহমান জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রন ওয়াবদা বাঁধটি মেরামতে সঠিক ভাবে কাজ করা হলে বড় ধরণের বন্যা হলেও ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতো না। পানি উন্নয়ন বোর্ড শুকনো মৌসুমে ঢিলেঢালা কাজ করে, আর বন্যা আসলে দ্রুত কাজ করে তাই বাধ গুলো পানির চাপে ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বাধ ভেঙ্গে গেলে বাঁধের পশ্চিম পার্শ্বে ফুলছড়ি উপজেলা প্রশাসনিক ভবনসহ সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষের বন্যার কবলে পরবে।

পানি বৃদ্ধির ফলে সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, জুমারবাড়ী, ভরতখালী, ঘুড়িদহ ও সাঘাটা ইউনিয়নের পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, দক্ষিণ সাথালিয়া, উত্তর সাথালিয়া, বাঁশহাটা, নলছিয়াসহ ১৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘুড়িদহ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা রোস্তম আলী জানান ঘুড়িদহ ইউনিয়নের চিনিরপটল গ্রাম, চিনিরপটল দাখিল মাদ্রাসা, ০১টি মসজিদসহ অনেক ঘরবাড়ী যমুনা নদীর পানির তীব্র স্রোতে হুমকির মুখে যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে।

এই দুই উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষরা নৌকার উপর রাত্রি যাপন করছেন। রাতে সাপ-পোকা ভয়ে থাকলেও তারা ডাকাতের আতঙ্কে নিজ নিজ বাড়ী পাহাড়া দিচ্ছেন। যাতে ঘরের মালামাল ও গরু-ছাগল চুরি না হয়।

সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর জানান, বন্যার স্থায়ীত্ব ও ভয়াবহতা উপলব্ধি করে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্নক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে।

এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি রক্ষায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও স্বেচ্ছা সেবকদের সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহউদ্দিন জাহাঙ্গীর, সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ ওয়াবদা বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম ইদ্রিস আলী বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী মজুদ আছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT