ঢাকা (দুপুর ১২:৩৯) শুক্রবার, ২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম

সংশোধিত সরকারি চাকরি আইনে আপত্তি কেন, কী আছে এতে!

জাতীয় ২৭৪ বার পঠিত

মেঘনা নিউজ ডেস্ক মেঘনা নিউজ ডেস্ক Clock সোমবার দুপুর ০৩:১৯, ২৬ মে, ২০২৫

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রত্যাহারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরই মধ্যে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার।

কয়েক দিনের মতো আজ সোমবার বেলা ১১টার পর তৃতীয় দিনের মতো কাজ বন্ধ করে সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের সামনে অবস্থান নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলন হচ্ছে সচিবালয়ে।

সেখানে এক সমাবেশে নেতারা আজকের মধ্যেই এই আইন বাতিলের দাবি জানান। এই আইনকে তারা কালো আইন বলে আখ্যা দিয়েছেন।
কিন্তু কী আছে এই অধ্যাদেশে? নিচে অধ্যাদেশটি হুবহু তুলে ধরা হলো :

সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নম্বর আইন)-এর অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজনীয় এবং যেহেতু সংসদ যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে; সেহেতু সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন :

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন।

(১) এই অধ্যাদেশ সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হবে।

(২) এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।

২। ২০১৮ সালের ৫৭ নম্বর আইনে ধারা ৩৭ক-এর সন্নিবেশ।

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নম্বর আইন)-এর ধারা ৩৭-এর পর নিম্নরূপ নতুন ধারা ৩৭ক সন্নিবেশিত হবে, যথা :

৩৭ ক। সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ডসংক্রান্ত বিশেষ বিধান।

(১) এই আইন বা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালায় যা-ই কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী—

(ক) এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের (insubordination) শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অথবা

(খ) অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া, নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অথবা

(গ) অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, অথবা

(ঘ) যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন,

তাহলে এটি হবে একটি অসদাচরণ এবং সে জন্য তিনি উপধারা (২)-এ বর্ণিত যেকোনো দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

(২) উপধারা (১)-এ উল্লিখিত কোনো কর্মের জন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে নিম্নবর্ণিত যেকোনো দণ্ড দেওয়া যাবে, যথা :

(ক) নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ;

(খ) চাকরি থেকে অপসারণ; এবং

(গ) চাকরি থেকে বরখাস্ত।

(৩) যে ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপধারা (১)-এ বর্ণিত কোনো অপরাধের জন্য কার্যধারা গ্রহণ করা হয়, সেই ক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা এ উদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অভিযোগ গঠন করবেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীকে, অতঃপর অভিযুক্ত বলে অভিহিত, কেন এই ধারার অধীন দণ্ড আরোপ করা হবে না- এই মর্মে নোটিশ জারির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে শুনানি করতে ইচ্ছুক কি না, ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি তা-ও ওই নোটিশে উল্লেখ করবেন।

(৪) অভিযুক্ত কারণ দর্শালে তা বিবেচনার পর এবং, ক্ষেত্রমতো, তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হলে শুনানি গ্রহণের পর, যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন অথবা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কারণ না দর্শিয়ে থাকেন, তাহলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি নোটিশের মাধ্যমে নোটিশে বর্ণিত প্রস্তাবিত দণ্ড কেন আরোপ করা হবে না, নোটিশ জারির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবেন।

(৫) উপধারা (৪)-এর অধীন প্রদত্ত নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কারণ দর্শালে তা বিবেচনার পর অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ না দর্শালে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উপধারা (৪)-এর অধীন নোটিশে বর্ণিত যেকোনো দণ্ড অভিযুক্তের ওপর আরোপ করতে পারবেন।

(৬) যদি অভিযুক্তের কাছে নোটিশ জারি করা হয় কিংবা তার সর্বশেষ জ্ঞাত বাসস্থানের কোনো দৃষ্টিগোচর স্থানে টাঙিয়ে জারি করা হয়, অথবা কমপক্ষে দুটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়, অথবা তার ই-মেইলে নোটিশ পাঠানো হয়, তাহলে এই ধারার অধীন নোটিশ যথাযথভাবে জারি হয়েছে বলে গণ্য হবে।

(৭) এই ধারার অধীন কোনো সরকারি কর্মচারীকে দণ্ড দেওয়া হলে, তিনি দণ্ড আরোপের আদেশপ্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে ওই আদেশের বিরুদ্ধে ধারা ৩৪-এর অধীন আপিল করতে পারবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ ওই আদেশ বহাল রাখতে, বাতিল করতে বা পরিবর্তন করতে পারবে।

(৮) উপধারা (৭)-এ যা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারার অধীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, তবে এই ক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী দণ্ড আরোপের আদেশপ্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে ধারা ৩৬-এর অধীন ওই আদেশ পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত মনে করবেন, সেরূপ আদেশ দিতে পারবেন।

(৯) উপধারা (৭)-এর অধীন আপিল বা ক্ষেত্রমতো উপধারা (৮)-এর অধীন পুনর্বিবেচনায় (রিভিউ) প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

 




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShasTech-IT