রাণীনগরে ফুট ব্রীজের নিমার্ণ কাজ বন্ধ : জনদূর্ভোগ চরমে
নিজস্ব প্রতিনিধি শনিবার রাত ০৯:৪৫, ১২ অক্টোবর, ২০১৯
এম এ ইউসুফ, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর গ্রামে তিন বছর পূর্বে ব্রিজ নির্মান কাজ শুরু হলেও তা শেষ হয়নি এখনো।
এলাকার জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে বরাদ্দ সাপেক্ষে ব্রীজ নিমার্ণের প্রাথমিক কাজ হিসেবে খালের দুই পাড়ে শুধুমাত্র দুইটি খাম্বা তৈরির পর রহস্যজনক কারণে প্রায় তিন বছর যাবৎ নিমার্ণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে এই ফুট ব্রীজের নিমার্ণ কাজ বন্ধ থাকায় ওই এলাকার দুইটি ইউনিয়নের প্রায় ২০ টি গ্রামের বসবাসরত সাধারণ মানুষসহ স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের রতনডারি খাল পাড় হতে চরম র্দূভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
তবে শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে খালে পানি পরিপূর্ণ হলে বাঁশের সাঁকো ও পারিবারিক ডিঙ্গি নৌকায় ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সর্বরামপুর-ভবানিপুর চৌতাপাড়া নামক স্থানে রতনডারি খালের উপর দিয়ে চলাচলের জন্য এলাকাবাসীর উদ্যোগে মাঝের মধ্যেই বাঁশের সাঁকো নির্মান করা হয়।
নির্মিত বাঁশের সাঁকো কাশিমপুর ও গোনা ইউনিয়নের অবহেলিত জনপদের মধ্যে সর্বরামপুর, কাশিমপুর, ডাঙ্গাপাড়া, এনায়েতপুর, মঙ্গলপাড়া, ভবানীপুর, পীরেরা, বয়না, বেতগাড়ী, দূর্গাপুর, কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ি, বেতগাড়ী গ্রামসহ প্রায় ২০টি গ্রামের জনসাধারণের যোগাযোগের ভরসা।
যোগাযোগ ব্যবস্থার এই আধুনিকতার যুগে স্বাধীনতার ৪৮বছর পার হলেও উপজেলার সর্বরামপুর চৌতাপাড়া নামক স্থানে রতনডারি খালের উপর দিয়ে পারাপারের জন্য একটি ব্রীজ নির্মাণ অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো অথবা নৌকা দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয় প্রায় ২০টি গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
তাই, এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল, সর্বরামপুর-ভবানীপুর চৌতাপাড়ায় একটি ব্রীজ নির্মাণ করা। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে রাণীনগর উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর গ্রাম সংলগ্ন রতনডারি সাধখালি খালের উপর ফুট ব্রীজ নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের মার্চ মাসে একটি দরপত্র আহবান করা হয়।
দরপত্র আহ্বানের পর দাপ্তরিক সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষে নওগাঁ সদরের পার-নওগাঁ মহল্লার মো: গোলাম কিবরিয়া নামের ঠিকাদার নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। সেই মোতাবেক শুষ্ক মৌসুমে ওই খালের দুই পাড়ে খাম্বা নির্মাণের পর রহস্যজনক কারণে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।
প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলেও এই ফুট ব্রীজটি নিমার্ণে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এলাকাবাসির মাঝে প্রশ্ন উঠেছে কবে শেষ হবে এর নিমার্ণ কাজ।
উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মকলেছুর রহমান বাবু জানান, জনগণের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে সর্বরামপুর-ভবানীপুর চৌতাপাড়ায় একটি ব্রীজ নিমার্ণের জন্য ২০১৬ সালে সাড়ে ১৮ লক্ষ টাকা উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সেই মোতাবেক কিছু কাজ হলেও বাঁকি কাজ দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। নিমার্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য আমি বার বার সংশ্লিষ্টদের কাছে ধরণা দিয়েছি। কিন্তু অদ্যবদি ফুট ব্রীজের বাকি কাজগুলো শুরু না হওয়ায় আংশিক অবকাঠামোও অপচয়ের দিকে চলে যাচ্ছে। অতি শীঘ্রই এই ব্রীজ নিমার্ণ করার দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো: শাইদুল ইসলাম মিঞা বলেন, ফুট ব্রীজটি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করা একান্ত জরুরি। এই ব্রীজের নিমার্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে এখনও প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা লাগবে। উপজেলা পরিষদের তহবিলে এই পরিমাণ টাকা না থাকায় ব্রীজটির নিমার্ণ কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। তাই অন্য কোন তহবিল থেকে প্রকল্প গ্রহণ করে কাজ সম্পূর্ণ করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।