মাস শেষ হলেও নাশতা পায়নি গৌরীপুরের কিশোর-কিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীরা
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ শনিবার রাত ০২:২৩, ৩০ জুলাই, ২০২২
গতকাল শুক্রবার ছিল জুলাই মাসের শেষ শুক্রবার। এদিন ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে ঢিলেঢালা ভাবে ক্লাস চললেও দেয়া হয়নি শিক্ষার্থীদের নাশতা।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ৩২.০১.০০০০.০০৩.২০.০২.২১.১৫৪৬ নং স্মারকে জানা যায়-গত ১৭ জুলাই কিশোর-কিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীদের জন্য দৈনিক ১৫ টাকা করে নাশতার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দের বিষয়টি গৌরীপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করলেও শিক্ষকদের জানিয়েছেন তিনি বরাদ্দ পাননি।
জানা যায়, গৌরীপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ; কিশোর-কিশোরী ক্লাবের নাশতার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর; শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মিথ্যা বলানো হচ্ছে। নাশতা না পেয়েও নাশতা পেয়েছে মর্মে সাংবাদিকদের কাছে বলানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে শিক্ষার্থীদের নৈতিক স্খলনের আশংকা করছেন সুধী সমাজ।
শুক্রবার সরেজমিনে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়-রামগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবৃত্তি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন শাহীন ও সংগীত শিক্ষক নিপা বর্মণ উপস্থিত আছেন। তারা জানান-সকাল ১০টা থেকে ক্লাস শুরু করেছেন। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাদের জানিয়েছেন নাশতার টাকা আসেনি, তাই শিক্ষার্থীদের নাশতা দেওয়ার দরকার নেই।
বোকাইনগর ইউনিয়নের বেতান্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেখা যায়, আবৃত্তি শিক্ষক আজম জহিরুল ইসলাম ও সংগীত শিক্ষক দৃষ্টি সূত্র ধর ক্লাস নিচ্ছেন। তারা জানান-নাশতার টাকা আসেনি তাই নিজেরা শিক্ষার্থীদের জন্য বিস্কুট কিনে নিয়ে এসেছেন।
অচিন্তপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর ১২টায় গিয়ে দেখা যায় কেন্দ্রে তালা ঝুলছে। আবৃত্তি শিক্ষক মোখলেছুর রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান-সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনি ক্লাস নিয়েছেন। এরপর থেকে সংগীত শিক্ষক চৈতি মজুমদার ক্লাস নেয়ার কথা, তিনি ছুটিতে থাকায় শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দিয়েছেন।
মাওহা ইউনিয়নের ভুটিয়ারকোণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সংগীত শিক্ষক আরিফুল হক উদয় ও আবৃত্তি শিক্ষক মোহসীন আলম। উদয় জানান-গত মার্চের পরে তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কোন নাশতা পাননি।
গৌরীপুর উপজেলা সুজনের সভাপতি রিয়াজুল হাসনাত বলেন, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মিথ্যা বলানো খুবই নীতি বিবর্জিত ও গর্হিত কাজ। এতে শিক্ষার্থীদের নৈতিক স্খলনের আশংকা রয়েছে। শিক্ষকদের প্রতিও এতে তাদের আস্থা ও শ্রদ্ধা কমে যাবে।
এ ব্যাপারে গৌরীপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই মাসের নাশতার টাকা উত্তোলন করা হয়নি, তাই এ মাসে শিক্ষার্থীদের নাশতা দেওয়া হয়নি।
গৌরীপুর কিশোর কিশোরীর ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন-নাশতার টাকা বরাদ্দ আসার পরও কেন উত্তোলন করা হয়নি ও জুলাই মাসে নাশতা দেয়া হয়নি, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।