ভারত থেকে বাংলাদেশ, অত:পর কোথায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহিম
এস এম সাখাওয়াত রবিবার রাত ১০:৫৭, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
আব্দুর রহিম। বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের সূর্য নারায়ণপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের মো. মুশা হকের ছেলে। দীর্ঘ দিন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে রাজমিস্ত্রীর কাজ শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর নিখোঁজ হয় সে। গত ৪ দিন ধরে ২৪ বছর বয়ষী যুবক রহিমের কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার।
নিখোঁজ আব্দুর রহিমের পরিবার, স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৬ মাস আগে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে প্রতিবেশি দেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়েছিলেন আব্দুর রহিম। কাজ শেষে দেশে ফিরে বাসায় ফেরার সময় মাঝপথেই নিখোঁজ হন তিনি। চলতি ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তার মুঠোফোন খোলা থাকলেও রাত থেকে বন্ধ দেখায়। এরপর চারদিন পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ রহিমের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার। এমনকি কোন প্রকার সন্ধানও পাওয়া যায়নি তার।
এ বিষয়ে আব্দুর রহিমের স্ত্রী রুমি খাতুন বলেন, ‘ত্রিপুরা রাজ্যে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন আমার স্বামী। গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসে। ভারত থেকে রওনা হওয়ার সময় এবং বাংলাদেশে প্রবেশের পরে একাধিকবার তিনি নিজে থেকে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং কোথায় অবস্থান করছেন তার আপডেটও দিয়েছেন। কিন্তু দুপুর ১২টায় তার সাথে সর্বশেষ কথা হবার পর থেকে তাকে আর মোবাইল ফোনে পাওয়া যাচ্ছেনা। শেষ কথা হবার সময় সে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানান।’
নিখোঁজ আব্দুর রহিমের শ্যালক জুয়েল রানা জানান, দুপুরে রুমি আপার সাথে দুলাভাইয়ের স্বাভাবিক কথা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আর কথা না হওয়ায় বাড়ির সকওে চিন্তায় পড়ে যায়। এরপর রাত ৯টার দিকে দুলাভাইয়ের ইমোতে কল দেয়া হলে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে বলে সেখানে আব্দুর রহিম নাই বলে ফোন কেটে দেয়। এরপর অনেকবার চেষ্টা করা হলেও আর ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। এনিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে পুরো পরিবার।
জুয়েল রানা আরও বলেন, দুলাভাইয়ের সাথে ভারত থেকে আরও দুই ব্যক্তি বাংলাদেশে এসেছে। তারা তিনজনে একসাথে সীমান্ত পার হয়েছে। কিন্তু নিখোঁজের পর ভারতীয় কন্ট্রাকটরের মাধ্যমে তাদের অপর দুই জনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোন সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। তারা জানিয়েছে, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকেই নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে আলাদা হয়েছে তারা। আর তাই কোনরকম সন্ধান না পাওয়ায় দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন যাপন করছে আমার বোন।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রইস উদ্দীন জানান, নিখোঁজ আব্দুর রহিমের পরিবার থানায় এসেছিল। তাদেরকে নিখোঁজ হওয়ার স্থানে যে থানা রয়েছে সেখানে গিয়ে জিডি বা অভিযোগ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জিডি বা অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে তদন্ত কাজ শুরু হলে নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে। প্রকৃতপক্ষে নিয়ম অনুযায়ী যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছে সেখানেই জিডি বা অভিযোগ করতে হবে।