ঢাকা (রাত ১:২৬) সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


বান্দরবানের লামায় মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধ ও পানি দূষণের ফলে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

জনদুর্ভোগ ২৩৬০ বার পঠিত

মোঃ কামরুজ্জামান মোঃ কামরুজ্জামান Clock সোমবার দুপুর ০১:১৫, ১৫ জুন, ২০২০

সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ, বান্দরবান প্রতিনিধিঃ বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের ব্রিকফিল্ড এলাকায় আবুহেনা মোস্তফা মুরগি খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধ ও পানি দূষণের ফলে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এতে খামারের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তীব্র দুর্গন্ধে গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে বার বার মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী। এর পরে ও কোন সুরাহা না পেয়ে পাহাড়ি-বাঙালি নিরুপায় হয়ে রবিবার (১৪ জুন’২০) বিকেল ৫ টার দিকে দূষণমুক্ত পরিবেশ চেয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নেমে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন লামা থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম। তবে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হওয়াই অসামাল হয়ে পড়ে তাদের জোরালো আন্দোলন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন লামা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুবল চাকমা, ও গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবু বাথোয়াইসিং মার্মা। এই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুবল চাকমা আন্দোলনরত গ্রামবাসীকে সান্ত্বনা দিয়ে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মুরগির খামারের মালিককে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরিষ্কারক পরিছন্ন করে বা যে কোন উপায়ে গ্রামবাসীকে দূষণমুক্ত পরিবেশ উপহার দেওয়ার জন্য হুকুম দেয়। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, লামা উপজেলার গজালিয়া ব্রিকফিল্ড এলাকায় মো. মঞ্জুরের ছেলে আবুহেনা মোস্তফা রিপন গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্রয়লার মুরগির খামার স্থাপন করে। এতে মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। এছাড়া ও এলাকাবাসী একমাত্র পানি ব্যাবহারের উৎস ছোট একটি ঝিরি সেখানে ও মুরগি বিষ্ঠা ফেলে পানি গুলো দূষিত করছে এবং পরিষ্কার পানি গুলো ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হয়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। গত এক মাস আগে প্রশাসন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কে অভিযোগ করা হয়। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে খামারের মালিক পক্ষকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও খামারের বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে খামার কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। মুরগির বিষ্ঠার তীব্র দুর্গন্ধে গ্রামের পথঘাটে হাঁটা যায় না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মুরগির খামারের বিষ্ঠা ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা পানি ও বর্জ্য সরাসরি এলাকার ছোট্ট নদীতে নির্গত হচ্ছে নালার মাধ্যমে। ফাতেমা পারুল নামে এক স্থানীয় মহিলা বলেন, আমাদের এলাকায় এই ছোট্ট নদী ছাড়া অন্য কোন প্রাণীর ব্যবস্থা নেই। এই নদীর পানি গুলো অজু, গোসল, কাপড়চোপড় ধুয়াপালা-সহ সব কাজে ব্যবহার করাহয়। কিন্তু খামারের বিষ্ঠা ও ময়লা-আবর্জনায় নদীর পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অপরদিকে মার্গারুর ত্রিপুরা বলেন, রাতের আঁধারে গ্রামের পতিত জমিতে বা রাস্তার পাশে মরা মুরগিসহ বিষ্ঠাভর্তি বস্তার স্তূপ করে রেখে যায় তারা। এবিষয়ে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মন্তব্যে জানা যায়, মুরগির খামারের বর্জ্যের কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে অ্যালার্জি, চর্ম, শ্বাসকষ্টসহ ফুসফুসের রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর থেকে শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনাও রয়েছে। এসব খামার সংলগ্ন এলাকার মানুষ বেশিরভাগ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে।



শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT