ঢাকা (সকাল ৮:০১) সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ ইং

প্রধান শিক্ষকের চিঠিতে আটকে গেছে ইইডি’র ফটক নির্মাণ



চাঁপাইনবাবগঞ্জের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দেয়া চিঠির পর আটকে গেছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর-ইইডি’র গেট নির্মাণ। পরে শিক্ষকদের বাধায় ও বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের চিঠি পাবার পর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ। ফলে ২০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ফটক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

 

চলতি মাসের ৮ এপ্রিল সোমবার গেট নির্মাণ বন্ধ করতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর-ইইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দেন হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. বাইরুল ইসলাম। একই চিঠি জেলা প্রশাসকের কাছেও দিয়েছেন তিনি।

 

চিঠিতে বলা হয়, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্থায়ী গেট নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই জায়গাটি বিদ্যালয়ের স্থায়ী সম্পত্তি। আর তাই হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গায় স্থায়ী গেট নির্মাণ বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো। আর তাই যতটুকু জায়গা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অফিসের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেইটুকুর ভেতরেই সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।

 

জানা যায়, তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের সম্মতিতে ২০২১ সালে হরিমোহন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের জমিতে নির্মাণ করা হয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আধুনিক ভবন। এর আগে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ভবনে চলতো ইইডির কার্যক্রম। ওই সময় নতুন ভবনের উত্তর পাশে একটি টিনের গেট ব্যবহার করতেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে পুরোনো সেই গেটের কাছে নতুন গেট নির্মাণ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। আর তাই বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পরপরই নির্মাণকাজ বন্ধের জন্য চিঠি দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

 

এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর-ইইডি’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিল্লুর রহমান জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উত্তরপাশে পুরোনো একটি টিনের গেট ছিল যেটা আমরা ব্যবহার করতাম। কিছুদিন আগে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এসেছিলেন। নতুন একটি গেটের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেন। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২০ লক্ষ টাকা। আর তাই পুরোনো গেটের স্থানে নতুন করে গেট নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। তবে হরিমোহন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিষেধ করার পর আমরা নির্মাণ কাজ বন্ধ কওে দিয়েছি। বিষয়টা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তারা যেটা সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে।

 

তবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এই কার্যালয় কারো ব্যক্তিগত নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রকৌশল দুটি প্রতিষ্ঠানই চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের সম্পদ। শিক্ষা বিস্তারে যেমন বিদ্যালয়ের প্রয়োজন আছে, ঠিক তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগেরও প্রয়োজন। দুটি প্রতিষ্ঠান আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। ইইডির ভবন বা গেট কোথায় হবে সেটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন ঠিক করবে। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা এখানে স্থায়ী নন।

 

এদিকে হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. বাইরুল ইসলাম জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে অফিস নির্মাণের জন্য হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২২ শতাংশ জমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়। সেখানে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ করা হয়ছে। কিন্তু বরাদ্দের বাইরে গিয়ে স্কুলের জমিতে গেট নির্মাণ করছিল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। সেটি বন্ধ করতেই চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠির অনুলিপি জেলা প্রশাসককেও দেয়া হয়েছে। ওই জায়গাটি স্কুলের অডিটরিয়ামের জন্য নির্ধারিত। সেখানে ইইডির ফটক নির্মাণ হলে পুরো জায়গা বেদখল হয়ে যাবে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম জানান, চিঠি পাবার পর সরেজমিন পরিদর্শণ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে গেট নির্মাণ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এটা নিয়ে আর কোনো ঝামেলা হওয়ার কথা নয়।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT