প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে দাউদকান্দি পৌরসভা নির্বাচন
এইচএম দিদার,দাউদকান্দি,কুমিল্লা রবিবার দুপুর ০২:১৮, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১
বন্দরনগরী চট্রগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার মূল প্রবেশদ্বার বলা হয় কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভাকে।একদিকে শীতের দাপট,অপরদিকে দাউদকান্দি পৌরসভা নির্বাচন দুই মিলেমিশে একাকার, জমছেও এবার বেশ দাউদকান্দি পৌরসভার নির্বাচন।প্রার্থীদের পোষ্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে বাজার, বিপণি বিতান,শপিংমলসহ প্রতিটি ওয়ার্ডের অলি–গলি। নির্বাচনী উত্তাপে সরগরম ভোটের মাঠ।
চতুর্থ ধাপের তফসিলে দাউদকান্দি পৌরসভার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই প্রথম দাউদকান্দিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে। নির্বাচনী আমেজ বইছে দাউদকান্দি পৌরসভা প্রতিটি ওয়ার্ডে।সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা কাজ করছে।হতে পারে এবারের নির্বাচন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।
সংঘাত সহিংসতা এড়িয়ে কৌশলে ভোট প্রার্থনা করছে প্রার্থীরা। ধারণা করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনে তুমুল লড়াই হবে। এই ভোটযুদ্ধে জয়ের ধারা বজায় রাখতে সংকল্পবদ্ধ বর্তমান পৌর মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন সমর্থকরা। তবে পুরাণের এই শিবির ভাঙতে ধানের শীষের নুর মোহাম্মদ সেলিম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবু মুছা মাঠে ঘাম ঝরাচ্ছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ যে যার কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছে। ভোটারদের মন জয়ে ৩ প্রার্থী ভোটের মাঠে ছুটছেন রাত–বিরাতে, যোগাচ্ছেন ভোটারদের মন।
মেয়র পদে ত্রি–মূখী লড়াই হবে এমন ধারনা এখানকার ভোটারদের। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন বর্তমান পৌরসভার মেয়র ও বাংলাদেশ আ.লীগ থেকে মনোননীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নাইম ইউসুফ সেইন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোননীত ধানের শীষের প্রার্থী নুর মোহাম্মদ সেলিম ও নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক রাজপথ কাঁপানো ছাত্র নেতা মোহাম্মদ আবু মুছা।
বর্তমান পৌর মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন এবারো বাংলাদেশ আ.লীগ মনোননীত নৌকা প্রতীক পেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন।আ.লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীদের শামাল দিয়ে অনকেটা নিশ্চিত নির্ভার তিনি। তাছাড়া এ পৌরসভায় তুলনামূলক আ.লীগ অনেক শক্তিশালী। একটি আদর্শ পৌরসভা বিনির্মাণে তার আপ্রাণ চেষ্টার কমতি নেই।ভোটের পাল্লা ভারি করতে ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তিনি। সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়ে ভোটারের আকৃষ্ট করছেন।পৌর মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন বলেন,”আমি পৌরসভা প্রতিটি ওয়ার্ডের অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি।আমি পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছি।করোনাকালীন দু:সময়ে পৌরবাসীর পাশে ছিলাম।আমি শতোভাগ আশাবাদী উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পৌরবাসি আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট পুনরায় মেয়র নির্বাচিত করবে।”
বিএনপি মনোননীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নুর মোহাম্মদ সেলিম সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। বর্তমান পৌর বিএনপির সভাপতি।ছিলেন শিক্ষাণুরাগী। দলীয়ভাবে তার ব্যক্তি ইমেজ অনেক ভালো।বিএনপির দলীয় নেতা–কর্মীদের কাছে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। গণসংযোগে তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনে কোনো কারচুপি না হলে তিনি জয়ের বন্দরে পৌঁছতে পারেন এমন ধারনা করছে দলটির স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। মেয়র প্রার্থী নুর মোহাম্মদ সেলিম সরকার বলেন,” আমার নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পৌরসভার বাজারসহ ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছে ভোট প্রার্থনা করছি এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পাচ্ছি। তিনি আরো বলেন,একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আমি আশাবাদী আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি জনগণ যদি নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তাহলে একটি ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় হবে –ইনাশাল্লাহ। এবং সেই সাথে বিজয়ের বিষয়েও আমি শতোভাগ নিশ্চিত।”
নারিকেল গাছ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবু মুছাও ভোটারের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন –এতে ভোটারদের মন গলছে।এ নির্বাচনে জয়ের জন্য দিন–রাত তিনি গণসংযোগ করছেন।আপন পর সকলকেই কাছে টানছেন ভালোবাসার যাদুতে।তার স্বপ্ন একটি মডেল পৌরসভা উপহার দেওয়া।পৌরবাসীর সেবা করাই তার ধ্যান ধারনা সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষে এগিয়ে চলছেন তিনি। ভোটের দৌঁড়ে তিনিও এগিয়ে আছেন।মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ আবু মুছা জানান,আমার যারা শুভাকাঙ্ক্ষী, বন্ধুবান্ধব আছে তারাসহ সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ যারপরনাই তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। আমি চাই,আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটুক।জনগণ যদি ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তাহলে আমি বিজয়ের ব্যাপারে শতোভাগ আশাবাদী। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে দাউদকান্দি পৌরবাসীকে একটি মডেল পৌরসভা উপহার দিবো।
উল্লেখ্য, ১৪ ফেব্রুয়ারি দাউদকান্দি পৌরসভার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে।৯ টি ওয়ার্ডে ১৭ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩১৫৪২ তন্মোধ্য নারী ভোটার ১৫৯৪০ ও পুরুষ ভোটার ১৫৬০২ জন।