নড়াইলে কথিত ছাগল চুরির অভিযোগে দুজন দিনমজুরকে অমানুষিক নির্যাতন
ইকবাল হাসান,নড়াইল মঙ্গলবার ১২:৪৩, ১৭ মে, ২০২২
গ্রাম্য কবিরাজ ফরিদ শেখ(৩২) ও ভ্যান চালক তরিক শেখ(২১)কে বাঁশের মুগুর, বাঁশের কুঞ্চি ও লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করবার পর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জলন্ত সিগারেটের আগুনে ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করেছে স্থানীয় মেম্বরের নেতৃত্বে তার সহযোগিরা।
গত রবিবার(১৫ মে) সকালে নড়াইলের লোহাগড়ার কোটাকোল ইউপির মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামে এ বর্বর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আহতরা লোহাগড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার রাত ১১টায় তাদেরকে লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নির্যাতিত ফরিদ ও তরিক জানান, আমরা গত রবিবার সকালে নিজ বাড়িতে (ফরিদের বাড়ি) জামরুল তলায় বসে গল্প করছিলাম। এ সময় ০৫নং ওয়ার্ডের মেম্বর কালাম মুন্সীর নেতৃত্বে ১০/১৫ জনে আমার (ফরিদের বাড়ি) বাড়িতে আসে। তারা আমাদের বলেন, একটি ঘর সরাতে হবে তোমাদের মজুরি দেবো।
শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে, তারা মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের নান্নু শেখের দোকানের সামনে নিয়ে দঁড়ি ও গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে মেম্বর কালাম মুন্সীর নেতৃত্বে আজমল মুন্সী, নান্নু শেখ, মিলাদ শেখ, ইজাজুল মুন্সী, রমজান মুন্সী সহ ১০/১৫ জনে বাঁশের মুগুর, বাঁশের কুঞ্চি ও লাঠি দিয়ে আমাদের বেদম মারপিট করে ও জলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করেছে।
দুর্বৃত্তরা জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামের হাই মুন্সীর ছাগল চুরি হয়েছে। আর সেই ছাগল চুরিতে তাদের সন্দেহজনকভাবে ধরে আনা হয়েছে। দুই ঘন্টা নির্যাতন চলার পর খবর আসে গ্রামের কাইনছের বাড়ির পাশে ছাগল পাওয়া গেছে। তখন আমাদের ছেড়ে দেয়। আমরা বাড়ি চলে যাই এবং পরে হাসপাতালে ভর্তি হই।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ফরিদ ও তরিকের শরীরে মারপিট ও সিগারেটের আগুনে ছাঁকা দেবার চিহ্ন রয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।
অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু হেনা মিলন জানান, ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ দোষীদের আটকের চেষ্টা করছে।
নির্যাতনের শিকার ফরিদ ও তরিক আরো জানান, রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে ২ঘন্টা আমাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। আমরা এ নিষ্ঠুর নির্যাতনের বিচার চাই।