ধর্মপাশায় আওয়ামীলীগের পরিবারকে ফাঁসাতে হেফাজত তকমা দিয়ে থানায় মামলা
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) বুধবার বিকেল ০৪:৫৭, ২৬ মে, ২০২১
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য রাজু আহমেদ এর ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান রাজা ও তার আপন ছোট ভাই যুবলীগ নেতা এমদাদুল হককে প্রতিহিংসা বসত হেফাজতের সমর্থকের তকমা দিয়ে থানায় মামলা করেন অই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের রংপুর হাটির জাগবর আলীর ছেলে জাহানুর আহমেদ মনির (২৫)।তিনি সুনামগঞ্জে একটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিতে চাকরি করে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়,একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ওই ইউনিয়নের একই গ্রামের মৃত সালাম উদ্দিনের ছেলে সাইদুর রহমান নোমান ও জাহানুর আহমেদ মনির ফেসবুক মেসেজে কথা কাটাকাটি হয়, সেই বিষয়টি কে সমাধানের জন্য একই গ্রামের মিত্তিং আলীর ছেলে মুফতি সা’দ উদ্দিন ও এমদাদুল হক মধ্যস্থতা হয়ে বিষয়টি সমাধান করেন।
পরে গত ২১শে মে শুক্রবার বিকেলে জাহানুর আহমেদ মনির রাজাপুর বাজারে গেলে আবারও সাইদুর রহমান নোমানের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়, সেই বাকবিতন্ডাকে বন্ধ করতে যুবলীগ নেতা এমদাদুল হক এগিয়ে গেলে জাহানুরের লোকজন যুবলীগ নেতা এমদাদুল হকের উপর হামলা চালায়।এতে এমদাদুল হক ও তার আপন ভাতিজা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান রাজা আহত হন।পরে তাদেরকে ধর্মপাশা সদর উপজেলা স্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
আহত যুবলীগ নেতা এমদাদুল হকের বড়ভাই ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান রাজার পিতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ইউপি সদস্য রাজু আহমেদ বলেন, আমার ছেলে ও ছোট ভাই ভালো একটা উদ্যোগ নিয়ে অন্যের ঝামেলা মেটাতে গিয়ে প্রতিহিংসার শিকার।যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা হওয়ার পরও তাদেরকে হেফাজতের তকমা পেতে হয়েছে।তিনি আরও বলেন এই ঘটনাটি ঘটার সাথে সাথেই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর কবীর বিষয়টি সমাধানের উদদোগ নেন।
জাহানুরের পরিবারের পক্ষ থেকেও সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। আমি আমার ছেলে ও ভাইকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে চলে যাই, আমি আমার ছেলে ও ভাইকে চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত থাকায় ও দুই নেতার হস্তক্ষেপের জন্য আমি কোন মামলা করিনি।পরে জানতে পারি জাহানুর আমার ছেলে সুলতান রাজা, ভাই এমদাদুল হক ও সাইদুর রহমান নোমান সহ ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত করে থানায় মামলা করে। যা একধরনের প্রতারণার শামিল।সেই ঘটনাটিকে ভিন্ন ভাবে রুপ দিতে আমার ছেলে ও ভাইকে হেফাজতের সমর্থক বানিয়ে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করে, যা আমার ও আমার পরিবারের জন্য সম্মান হানীকর।আমি এই মিথ্যা সংবাদের তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাহানুরের বক্তব্য নিতে তার ব্যবহারিত মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
যুবলীগ নেতা এমদাদুল হক ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান রাজার বেপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোকাররম হোসেন তালুকদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর কবির ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এরসাদুল ইসলাম বুলবুলসহ বেশ কয়েকজন নেতার কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিষয়টি জেনেছি। একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে এই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে তারা দুজন ও তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের পরিবার। তারা হেফাজতের লোক বা সমর্থক নয় এবং আমরা অনেকেই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টাও করেছি। জাহানুরের পরিবারের পক্ষ থেকে সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছিল।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন,বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।