ঢাকা (সকাল ৯:১১) বুধবার, ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে রোজেলা চা

লাইফস্টাইল ২৩৭৬ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি নিজস্ব প্রতিনিধি Clock বুধবার সন্ধ্যা ০৬:১১, ২২ জুন, ২০২২

একটিই ফল, তবে একেক যায়গায় একেক নামে পরিচিত। কেউ চেনে চুকাই, চুকুরি, মেস্তা নামে। কেউবা হড়গড়া, হইলফা নামে। তবে ইদানীং রোজেলা হিসেবে এটি বেশ পরিচিতি পাচ্ছে। বিশ্বের কিছু এলাকায় হিবিস্কাস টি হিসেবেও এর পরিচিতি রয়েছে।

রোজেলা ফলে নানা রকমের পুষ্টিগুণ রয়েছে। হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং হার্টের জন্য এ ফলটি খুবই উপকারী। এটি ত্বক ভাল রাখে। এর পাশাপাশি বিশ্বের অনেক দেশে এটি চা বা শরবত হিসেবে খাওয়া হয়। রাজধানীতে অনেক দোকানে ইদানীং বিদেশ থেকে আমদানি করা রোজেলা চা পাওয়া যাচ্ছে। এ চায়ের পাতায় ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশেও কিছু অঞ্চলে রোজেলা ফলের চাষ শুরু হয়েছে। এ ফলটি গত দুই বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন নাটোরের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম। তিনি এটি কাঁচা নয়, শুকিয়ে চা তৈরি করে বিক্রি করছেন।

রোজেলা ফল চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ গাছ আমাদের বাড়িতে ছোটবেলা থেকেই ছিল। বছর দুয়েক আগে একটা এনজিও’র কাছে ধারণা নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। তারা আমাকে সাহায্য করেছে। প্রথম নিজের জমিতে অল্প কিছু চাষ করেছিলাম। পরে আমার জমির আশপাশে অন্য চাষিদের জায়গাতেও করেছি। এই বছর নয় বিঘা জমিতে লাগিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ গাছটিতে খুব বেশি পানি লাগে না। তবে এটি চাষ করতে প্রচুর রোদের দরকার হয়। তাই বর্ষা ও শীত এর প্রধান মৌসুম। তারপর একটি নির্দিষ্ট লাল রঙ হওয়ার পর ফলগুলো উঠানো হয়। পরে ফল থেকে বীজগুলো বের করে ফেলা হয়।

উৎপাদনের বিষয়ে শহিদুল বলেন, রোজেলা ফল হালকা পানি ছিটিয়ে স্বয়ংক্রিয় মেশিনে দিয়ে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় শুকানো হয়। এরপর মোড়কজাত করা হয়। বাইরের আর্দ্রতার কারণে এটি রোদে শুকালে স্বাদ ও গন্ধ ভালো পাওয়া যায় না। ২০ কেজি কাঁচা ফল শুকিয়ে ১ কেজির মতো শুকনো রোজেলা পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, এক কেজি শুকনো চা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকায়। খুচরা বিক্রি হয় আরও বেশি দামে।

এ ফলের উৎপাদনে এবং রপ্তানিতে বাংলাদেশে দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট।

পাট পাতা দিয়ে চায়ের উদ্ভাবক বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের উপদেষ্টা এইচ এম ইসমাইল খান বলেন, এর চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ দুটোই দেশে খুবই সহজ। যেহেতু এই ফলটি জনপ্রিয় হচ্ছে, তাই দেশের জন্যেও বাণিজ্যিক চাষ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ঔষধি গুণাবলির জন্যে এটি চাষ করা যেতে পারে। সফট ড্রিংক হিসেবেও বিক্রি করা যায়। এটি কসমেটিক এবং সাবানেও ব্যবহৃত হয়। সব দিক দিয়ে এটি লাভজনক।

ইসমাইল খান বলেন, মিশরসহ আফ্রিকার অনেক দেশে কেউ বাড়িতে বেড়াতে এলে আপ্যায়নের সময়, হোটেলে রেস্তোরাঁয় ওয়েলকাম ড্রিংক হিসেবে ঠাণ্ডা করে গ্লাসে এটা সবসময় দেয়া হয়। আমাদের দেশে এর রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ফল উৎপাদন ও রপ্তানির বিষয়ে তিনি বলেন, রোজেলা ফল উৎপাদনের জন্য চমৎকার মাটি ও আবহাওয়া বাংলাদেশে রয়েছে। দেশে তোষা ও বাংলা পাট নামে যেগুলো পরিচিত সেগুলো যদি ৭০ শতাংশ আর রোজেলা যদি ৩০ শতাংশও চাষ করা হয় তাহলেও এর দ্বারা কৃষকেরা উপকৃত হবেন। কারণ এর তিনটি অংশই ব্যবহারযোগ্য। এর পাতা, আঁশ এবং ফল তিনটিই কাজে লাগানো যাবে। তবে ফলটির মূল্য সবচেয়ে বেশি।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT