দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১০ নভেম্বরের সম্মেলনে কুলাউড়া আঃলীগের নেতৃত্বের নতুন চমকের সম্ভাবনা
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার সন্ধ্যা ০৭:৩১, ৮ নভেম্বর, ২০১৯
মোঃ জাকির হোসেন, জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন দীর্ঘ ১৫ বছর পর আগামি ১০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে সকল প্রস্তুতি চলছে। যথাসময়ে দলটির সম্মেলন না হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়।
দীর্ঘদিন পর হতে যাওয়া সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে দ্বিধা বিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে। কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের তরুণ নেতাকর্মীরা নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশা করছেন। তবে নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে দলে ত্যাগী নেতাদের সবাইকে নিয়ে নতুন কমিটি গঠিত হবে এমন আশা করছেন দলের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতারা।
সম্মেলনের ৩দিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে প্রার্থীরা স্ব স্ব পদে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি প্রচারণা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে। সম্মেলনকে সামনে রেখে উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন।
কারা আসছেন কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে-তা দেখা যাবে সম্মেলনের মাধ্যমে। সমঝোতা না ভোটে নেতা নির্বাচিত করা হবে এ নিয়েও রয়েছে আলোচনা। অনেকে আলোচনার মাধ্যমে কমিটির পক্ষে মত দিলেও কেউ কেউ কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে কমিটি হওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন। আবার অনেকে সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্বে আসার জন্যও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্মেলনকে সামনে রেখে কুলাউড়া উপজেলায় দ্বিধা বিভক্ত নেতাকর্মীরা পদ পদবী পেতে লবিং, দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
গত ২৪ অক্টোবর কুলাউড়া পৌরসভা হল রুমে বর্ধিত সভায় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের মধ্যদিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠছে আওয়ামী রাজনীতি।
সর্বশেষ বিগত ২০০৪ সালে ১২ ডিসেম্বর কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল মতিনকে সভাপতি ও বর্তমান সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৭ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
কুলাউড়া উপজেলা কমিটিতে ৬৭ সদস্যের কমিটি থাকলেও বিগত ১৫ বছরে ১৪ জন নেতা মৃত্যুবরণ করায় বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগে ৫৩ জন নেতা জীবিত আছেন। এর মধ্যে অনেকে দিন ধরে প্রবাসে বসবাস করায় এবং অনেকেই বার্ধক্যজনিক ও অসুস্থতার কারণে দলের কর্মকান্ড থেকে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বলে দলের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষনার পরপরই প্রায় ১৮ জন সভাপতিও সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা শীর্ষনেতাদের আর্শীবাদ পেতে জোর লবিং করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তৃণমূল ও কাউন্সিলরদের সমর্থন আদায়ের প্রাণপণ চেষ্ঠা করছেন।
এরই মধ্যে কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রত্যাশী হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুক সহ লোকমুখে আলোচনায় আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি মোঃ আব্দুল মতিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম রেনু, আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সফি আহমদ সলমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, নবাব আলী ওয়াজেদ খান বাবু, উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা মোস্তফা আব্দুল মালিক, উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য পৌর মেয়র সফি আলম ইউনুছ,সিলেট বিএমএর সভাপতি ডাঃরুকন উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি অরবিন্দু ঘোষ বিন্দু।
এছাড়া সাধারন সম্পাদক পদে যাদের নাম শোনা হচ্ছে তারা হলেন-উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,কুলাউড়া কলেজের সাবেক ভিপি আব্দুল মোক্তাদির তোফায়েল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কুলাউড়া কলেজের সাবেক এজিএস মনসুর আহমদ চৌধুরী ও ফজলুল হক ফজলু, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান যুব বিষষক সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ও সহ দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ খালেদ পারভেজ বখশ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক সফিউল আলম সফি, যুক্তরাজ্য আ. লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কামাল হাসান, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি বদরুল ইসলাম বদর ও জেলা শ্রমীকলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ প্রমুখ। ইতিমধ্যে সম্মেলনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল মতিনকে আহ্বায়ক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম রেনুকে সদস্য সচিব করে কার্যকরী কমিটির সকল সদস্য করে সম্মেলন প্রস্তুতি আহ্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়।
দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে কারা সভাপতি ও সম্পাদক হচ্ছেন এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। ইতোমধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় যেসব উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে, সবক’টি উপজেলায় সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত নাম নির্ধারিত হয়ে এসেছে। ফলে কুলাউড়া উপজেলায় ও প্রার্থীরা কাউন্সিলদের চেয়ে পদ পেতে জেলা ও কেন্দ্রে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সিলেটে দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমপি নেছার আহমদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা পরিষদ সদস্য,কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ন সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাউদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও অধ্যাপক রফিকুর রহমান,জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এমপি আব্দুস শহীদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মিছবাউর রহমান উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।