দাউদকান্দিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে থানা ঘেরাও, মহাসড়ক অবরোধ
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার মঙ্গলবার সন্ধ্যা ০৬:১০, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
দাউদকান্দিতে কলেজ অধ্যক্ষের ফেরার খবরে স্থানীয়দের হামলায় ২০শিক্ষার্থী আহত। ক্যাম্পাস জুড়ে আতঙ্ক। থানা, উপজেলা চত্বরে ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বরকোটা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। যার ফলে মহাসড়কের দু’পাশে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলে এসব ঘটনা।
সরেজমিন ঘুরে ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গেল ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরে উপজেলার বরকোটা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিনের অপসারন চেয়ে কলেজে বিক্ষোভ করেন স্থানীরা।
এরপর ১৮ আগস্ট থেকে ছুটিতে আছেন অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন। ছুটি কাটিয়ে আজ মঙ্গলবার ( ১০ ডিসেম্বর) জসিম উদ্দিন কলেজে যাবে এমন খবর ছড়িয়ে পরলে কিছু শিক্ষার্থী তাকে বরণ করে নিতে উপস্থিত হয় কলেজ এলাকায়। এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পরলে অধ্যক্ষকে কলেজে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না ঘোষণা দেয় স্থানীয় কয়েকজন যুবক। এসময় তারা লাঠি-সোটা নিয়ে কলেজ এলাকায় মহড়া দেয়। একপর্যায়ে ছাত্রদের সাথে বাকবিতণ্ডায় স্থানীয়দের হামলায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— সাজ্জাদ, দ্বিপ, ফয়সাল, মৃদুল, কামরান, সিয়াম, রিমন, তানভীর, ফয়সাল, জিসান, হামিদা, সাদিয়া, মনিকা, দিয়া, ইসরাত জাহানসহ আরো কয়কজন।
পরে এই ঘটনায় বেলা ১২টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দির গৌরীপুর বাস স্টেশনে এসে শিক্ষার্থীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় মহাসড়কের ঢাকা ও চট্টগ্রামমূখী লেনে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় ছাত্ররা যুবদলনেতা রুহুল আমিন, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক সাইফুল, মাসুদ ও বিল্লালসহ কয়েকজন শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে স্লোগান দেয়। পরে হাইওয়ে পুলিশের প্রচেষ্টায় ঘন্টাব্যাপী চলা অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
এদিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে বেলা ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা দাউদকান্দি মডেল থানা এলাকা থেকে মিছিল করে উপজেলা চত্বরে এসে ঝড়ো হয়।
শিক্ষার্থী সাজ্জাদ, ইয়ামিন, জিসান বলেন, আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার কলেজে আসবে সেজন্যে আমরা কলেজে যাই। কলেজে পৌছার আগেই রুহুল আমিনের লোকজন ও ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালসহ আরো কয়েজন মিলে আমাদের উপর হামলা করে। আমাদের ১৫/২০জন সহপাঠী আহত হয়েছে।
দাউদকান্দি উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রুহুর আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্ঠা করেও তাকে পাওয়া যায়নি৷
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু ওবায়েদ বলেন, ছাত্রদেরকে সড়ক অবরোধের ফলে সড়কের উভয়মুখে যানজট সৃষ্টি হয়। হাইওয়ে পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে।
দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ও পৌরসদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অধ্যক্ষ কলেজে যাওয়ার ঘটনায়। আমরা বিষয়টি দেখছি।
দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাঈমা ইসলাম জানান, দুই অধ্যক্ষকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সবাইকে নিয়ে বসতে হবে এই সমস্যার সমাধানে। আর কারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন বলেন, আজকে আমার ছুটি শেষ করে কলেজে যোগদান করতে যাই এসময় যুবদল নেতা রুহুল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুলের নির্দেশে বহিরাগত দিয়ে আমার কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অর্তকিত হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।