জ্বর হলে যা করবেন
নিজস্ব প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার দুপুর ০২:২৪, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
জ্বর কোনো রোগ নয়, বরং অন্য রোগের লক্ষণ। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদির দ্বারা আক্রান্ত হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। জীবাণুর হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করার জন্য শরীরে প্রকৃতি প্রদত্ত এটি একটি প্রতিরোধক দেয়াল। জ্বর হলে অনেক নিয়ম মানা হয়, যা পুরোপুরি ঠিক নয়।
গোসল ও গা মুছে দেয়া
অনেকের ধারণা, জ্বর হলে গোসল করা যাবে না। এটি ভুল ধারণা। জ্বর হলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি শরীর চনমনে হয়। ২৭ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানি দিয়ে গোসল করা ভালো।
অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা ঠিক হবে না। এতে ত্বকের নিচে রক্তজালিকা সংকুচিত হয়ে যায়। কাঁপুনি শুরু হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করাও জ্বরের সময় অনুচিত।
গোসলের বিকল্প হতে পারে ভেজা গামছা বা তোয়ালে দিয়ে সারা শরীর মুছে দেয়া। এ ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে হবে কুসুম গরম পানি।
জলপট্টি ও বরফের ব্যবহার
জ্বরের সময় কপালে জলপট্টি দেয়ার প্রচলন আছে। তবে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেড়ে গেলে এর পরিবর্তে বগলের নিচে বা কুঁচকিতে বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব স্থানে রক্তনালিগুলো অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত। ফলে ঠান্ডা প্রয়োগ করলে দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। বরফের খণ্ড গামছা বা কাপড়ে পেঁচিয়ে উল্লিখিত স্থানে কিছুক্ষণ চেপে রাখলে দ্রুত তাপমাত্রা কমে যাবে। ১০-১৫ মিনিট এগুলো রাখা যেতে পারে।
খাবার ও পোশাক
জ্বর হলে তরল পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। বেশি খাবার একসঙ্গে খাওয়ানো উচিত নয়। কেননা, এটি শরীরের তাপ উৎপাদন বৃদ্ধি করবে। বদহজম হতে পারে। এ সময় সুতি কাপড়ের জামা পরা দরকার, যাতে ভেতর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়। দরজা-জানালা খুলে দেবেন, পাখা ছেড়ে দেবেন, যাতে বাতাস চলাচল করে।
ঘুম ও বিশ্রাম
পর্যাপ্ত ঘুম বা বিশ্রাম এ সময় খুবই প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাকে সক্রিয় রাখতে কমপক্ষে আট ঘণ্টা রাতের ঘুম প্রয়োজন। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী দিনেও বিশ্রাম দরকার।
পানি পান
জ্বর হলে পানিশূন্যতার আশঙ্কা বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা যত বেশি হবে, পানিশূন্যতার আশঙ্কা তত বাড়বে। এ ছাড়া জ্বরের সময় ক্ষুধামান্দ্য ও বমি—এ দুটি পানিশূন্যতার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। পানিশূন্যতার কারণে মাংসপেশিতে চিবানো বা ব্যথা শুরু হতে পারে। রক্তচাপ ও প্রস্রাব কমে যেতে পারে।
মনে রাখুন
জ্বর তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে; অত্যধিক মাত্রায় জ্বর হলে কিংবা তীব্র মাথাব্যথা, খিঁচুনি, অস্বাভাবিক আচরণ, শ্বাসকষ্ট, ক্রমাগত বমি ও তীব্র পেটব্যথা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।