ঢাকা (দুপুর ১২:২৪) রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ ইং

হার্ট ভালো থাকবে যে নিয়মগুলো মানলে



একজন সুস্থ মানুষের হার্ট বা হৃদ্‌যন্ত্র প্রতি মিনিটে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রক্ত সারা শরীরে সঞ্চালন (পাম্প) করে থাকে। আর এই রক্ত ধমনির মাধ্যমে শরীরের সব কোষের অভ্যন্তরে পৌঁছায়, অক্সিজেন সরবরাহ করে।

হৃদ্‌যন্ত্র অনেকটা ঘড়ির কাঁটার মতো। ব্যাটারি থাকলে বিরামহীনভাবে চলে। কোনো ত্রুটি হলে ছন্দপতন হয়। হৃদ্‌যন্ত্রের ছন্দপতন হয় অসচেতনতা, অযত্ন আর অবহেলায়। কারণ, আমাদের রক্তনালিতে ধীরে ধীরে চর্বি জমে, সচেতন থেকে কায়িক শ্রম আর কসরত করলে বাড়তি চর্বি ঝরিয়ে ফেলা যায়।

কিন্তু সেই ফুরসত কোথায়? বার্ধক্যে উপনীত হলে ক্যালসিয়াম আর রক্তকণিকার জমাট উপাদানে ভরে ওঠে ধমনির গা। হার্টের রক্তনালি বা করোনারি আর্টারি যেসব মাংসপেশিতে নিরবচ্ছিন্ন রক্ত পরিসঞ্চালনের মাধ্যমে এত দিন অক্সিজেন জোগাত, দীর্ঘক্ষণ অক্সিজেনের অভাবে সে পেশিগুলো একসময় অকেজো হয়ে পড়ে। হার্টের মাংসপেশি নিস্তেজ হওয়ার আগেই অক্সিজেনের অভাবে বুকে তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে থাকে। এমন অবস্থাকে চিকিৎসকেরা হার্টের অ্যানজাইনার ব্যথা বলে থাকেন। এ ধরনের ব্যথা মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন বা হার্ট অ্যাটাকের পূর্বসংকেত। আর এরপরও যদি আমরা হার্টের প্রতি যত্নশীল না হই, তখনই প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দেয়।

হৃদ্‌রোগের কারণ কী

৬৫ বা তদূর্ধ্ব বয়সের মানুষের অধিকাংশ ক্ষেত্রে করোনারি হৃদ্‌রোগের কারণে মৃত্যু হয়ে থাকে। তবে সচেতন না হলে পুরুষেরা ৪৫ বছর আর নারীরা ৫৫ বছর বয়স থেকেই এ ধরনের মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে থাকেন। শুধু রক্তনালির জমাট বাঁধা নয়, উচ্চ রক্তচাপের কারণেও আমরা আমাদের হৃদ্‌যন্ত্রকে দুর্বল করে ফেলতে পারি। হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে দুশ্চিন্তা, ধূমপান, মদ্যপান, আয়েশি জীবনযাপন, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ ও পারিবারিক হৃদ্‌রোগের ইতিহাস থাকলে। অনেক সময় জন্মগত হৃদ্‌রোগের কারণেও আমাদের হৃদ্‌যন্ত্র কাজের শক্তি হারিয়ে ফেলতে পারে। বিরল ক্ষেত্রে জিনগত কারণে হৃৎপেশি দুর্বল হয়ে পড়লে হৃদ্‌যন্ত্রের ছন্দপতন হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন

রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে অ্যানজাইনার কারণে বুকে যে ব্যথা হয়, তার একটি নির্দিষ্ট ধরন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝখানে হাড়ের পেছনে অনুভূত হয়। শরীর ঘেমে ওঠে। ব্যথা অনেক ক্ষেত্রে বাঁ হাতের ভেতর দিক বরাবর নেমে আসতে পারে। হাঁটাহাঁটি করলে, বিশেষ করে সিঁড়ি বেয়ে উঠলে এ ব্যথা আরও তীব্রতর হয়। যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাদের কোনো এক পর্যায়ে বুকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তবে মাথা ও ঘাড়ে ব্যথার সমস্যার কথা এ ধরনের রোগীরা বলে থাকেন। জটিল আকার ধারণ করলে সে ক্ষেত্রে হার্ট ফেইলিওর হয়ে হাত, পা ও পেটে পানি আসতে পারে।

কীভাবে হার্টের যত্ন নেবেন

খাদ্যতালিকায় হার্টের জন্য উপকারী এমন খাবার, যেমন তাজা শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছ, অলিভ ওয়েল বা শর্ষের তেল ও ফল রাখুন। তবে হার্ট ফেইলিওরের সমস্যা থাকলে রসাল ফল খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন। খাবারে বাড়তি লবণ পরিহার করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।

প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট হাঁটুন। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন।

মাদক ও তামাকজাতীয় দ্রব্য পরিহার করুন।

হৃদ্‌রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে অল্প বয়স থেকেই স্ক্রিনিং করান।

মানসিক চাপ কমে বা মনে প্রফুল্লতা আসে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন।

উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT