চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধৃত শিক্ষকের বিচারের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ বৃহস্পতিবার রাত ০১:০৯, ২৫ আগস্ট, ২০২২
মেয়ের বান্ধবীর সাথে স্কুল কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় ধৃত ও বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে; সত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিষয়ের অভিযুক্ত আটক শিক্ষক গোলাম কবিরের (৪৫) সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে; চাঁপাই-সোনামসজিদ মহাসড়কে গাছের ডাল ও বাঁশ ফেলে অবরোধ করে রাখে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ। পরে পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের সাথে আটক শিক্ষকের বিচারের আশ্বাস দিলে; অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু করে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শারিরীক শিক্ষার শিক্ষক গোলাম কবির ও একই স্কুলে ১০ম শ্রেণী পড়ূয়া তার মেয়ের বান্ধবীকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে; বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। পরে স্থানীয়রা শরীরচর্চা বিভাগের সরঞ্জাম রাখার কক্ষে শিক্ষকের সাথে ওই ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে; প্রতিবাদে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ওই কক্ষে আটক করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, স্থানীয় কয়েকজন যুবক দীর্ঘদিন ধরে তাদেরকে অনুসরণ করছে। প্রায় সময়ই স্কুল ছুটির পর বিকেলে তারা দুইজনকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেখা যায়। শরীরচর্চা বিভাগের শিক্ষক গোলাম কবিরের কাছে বিদ্যালয়ের মূল ফটকসহ বিভিন্ন কক্ষের চাবি থাকায়; প্রবেশের পর বাইরে তালা দিয়ে দেয়া হয় যাতে মনে হয় ভেতরে কেউ নেই। মঙ্গলবার সুযোগমতো পেয়েছি বলে ধরতে সক্ষম হয়েছি।
স্থানীয় যুবক নয়ন আলী বলেন, আটকের পর ওই শীলতাহানীর শিকার শিক্ষার্থী জানায়; দীর্ঘদিন আগে তাকে স্কাউটের পোশাক দিয়েছিলেন শিক্ষক গোলাম কবির। পরে একটি কক্ষে পোশাক পরিধান করার সময় কিছু আপত্তিকর ছবি ধারণ করে শিক্ষক গোলাম কবির। পরে সেই ছবির কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করে; কয়েকবার তার সাথে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেছে শিক্ষক কবির।
এ বিষয়ে সত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব মো. সাদেকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে আমার ফোনে কল আসে একটি রুমে শিক্ষক গোলাম কবির ও এক ছাত্রীকে আটক করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। পরে এসে সকলের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায়; পুলিশের হাতে তাদের উভয়কে তুলে দেয়া হয়েছে। তবে একই রুমে দুইজনকে পাওয়া গেলেও কি অবস্থায় পাওয়া গেছে তা আমি নিশ্চিত নয়। কিন্তু ঘটনার পর অভিযুক্ত ক্রীড়া ও শারিরীক শিক্ষক গোলাম কবিরকে বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে যোগদানের পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠেনি বলেও জানান প্রধান শিক্ষক।
তবে এ বিষয়ে সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আতাউর রহমান জানান, অবরোধের খবর পেয়ে আমরা বিদ্যালয়ের সামনে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করলে তারা অবরোধ তুলে নেয়। ফলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। আর আটক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ঘটনার দিন বিকেলে সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জুবায়ের হোসেন। এ বিষয়ে মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান, শিবগঞ্জ থানার ওসি-তদন্ত মো. আসাদুজ্জামান।