চাঁপাইনবাবগঞ্জের যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুঁই গ্রেফতার
এস এম সাখাওয়াত মঙ্গলবার রাত ০৯:৫৮, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর যুব মহিলা লীগের সভাপতি জুঁই আক্তার (৩৩) কে। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বিকালে পৌর এলাকার হুজরাপুর মহল্লার নিজ বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
জানা যায়, গতকাল সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের চত্বরে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত ফলকের পাদদেশে আন্তর্জাতিক দূর্নীতি বিরোধী দিবস পালন উপলক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেই মানববন্ধন ও তদপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষের আলোচনা সভায় প্রকাশ্যে অংশগ্রহণ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মহিলা যুব লীগের কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত জুঁই আক্তার। জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আইনজীবী ইয়াসমিন সুলতানা রুমা ও সাধারণ সম্পাদক শান্তনা হক শান্তা স্বাক্ষরিত পত্রে ২০১৮ সালে তিনি এই দায়িত্ব পান। এদিকে মানববন্ধনে অংশ নেয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেই ছবি ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ ও পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুব মহিলা লীগ নেত্রী বলেন, আগের দিন সোমবার আন্তর্জাতিক দূর্নীতি বিরোধী দিবসের মানববন্ধনে জুঁই আক্তারসহ আমরা কয়েকজন যুব মহিলা লীগ নেত্রী অংশগ্রহণ করি। এই ছবি ফেসবুকে আসে ও বিভিন্ন গণমাধ্যম তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। কোন অপরাধ না থাকলেও শুধুমাত্র ডিসি-এসপির সাথে মানববন্ধনে অংশ নেয়ায় জুঁইকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ এই নেত্রীর।
এদিকে গ্রেফতার বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইস উদ্দিন বলেন, চলতি বছরের ৪ আগস্ট রবিবার ছাত্র-জনতার ওপর হামলার প্রেক্ষিতে নভেম্বর মাসে সদর মডেল থানায় করা চলমান মামলায় জুঁই আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তিমোড় এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যোগ দিতে ছাত্ররা যখন বিভিন্ন স্থান থেকে আসছিল ঠিক সেই সময় আন্দোলনকারীদের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ করে সরকার পতনের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১ নভেম্বর শুক্রবার বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন মো. ইউসুফ আলী নামে এক যুবক।
ওই মামলায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ সদর আসনের সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছিল এবং এতে আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছিল।