ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ মঙ্গলবার বিকেল ০৫:৪১, ২৯ জুন, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় শালীহর গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত স্থান বধ্যভূমির স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজে ত্রুটি থাকায় ও মান ভাল না হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ কারণে সোমবার (২৮) জুন এ স্মৃতিসৌধের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বুঝে নেননি ইউএনও হাসান মারুফ। এসময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে যথাযথাভাবে কাজটি সম্পূর্ণ করে হস্তান্তরে তাগিদ দেন তিনি।
উল্লেখ্য,ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শালীহর গ্রামে ১৯৭১ সালের ২১ শে আগষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে গিয়ে ১৪ জনকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে এবং ২ জনকে ধরে নিয়ে যায়, যাদের আজো জানা যায়নি তাদের কি করেছে পাক বাহিনী। এ ঘটনার স্বীকৃতিস্বরূপ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবী ছিলো দীর্ঘদিনের। এ দাবীর প্রেক্ষিতেই ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজটি সম্প্রতি বাস্তবায়ন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী কন্সট্রাকশন। এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজটি তড়িঘড়ি শেষ করে যথাযথভাবে সম্পন্ন না করেই ইউএনও’র নিকট হস্তান্তরের চেষ্টা চালায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়নি। স্মৃতিসৌধের চারপাশে দেয়া হয়েছে বালু যা বৃষ্টির পানিতে সরে গিয়ে দেয়াল ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঢালাই ও প্লাস্টার সঠিকভাবে করা হয়নি এবং রংসহ অন্যান্য কাজ সঠিকভাবে করা হয়নি।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, এ নির্মাণ কাজটিতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। ঢালাইয়ের কাজে কোন বাইভ্রেটর ব্যবহার করা হয়নি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন জানান, সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে এ স্মৃতিসৌধটি ইউএনও’র নিকট হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু পরিদর্শনকালে নির্মাণকাজের বিভিন্ন ত্রুটি দেখতে পেয়ে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহন করেননি তিনি। এ সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার তাগিদ দেন তিনি। এদিকে কাজের মান ভাল না হওয়ায় উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজনের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী কন্সট্রাকশনের প্রতিনিধি আজিম জানান, নির্মাণকাজের যে কাজগুলো বাকী আছে তা দ্রুত সম্পন্ন করে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
গণপূর্ত বিভাগ ময়মনসিংহের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আনার মিয়া জানান, দু’এক দিনের মধ্যে তিনি এ নির্মাণ কাজটি পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।