গৌরীপুরে বেড়েই চলছে করোনার সংক্রমণ
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ শনিবার দুপুর ০২:০৬, ১০ জুলাই, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে হো হো করে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন। তারপরো কিছুতেই সচেতন হচ্ছে না মানুষ।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রশাসন রয়েছে কঠোর লকডাউন। তার পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশ নিয়মিতভাবে টহল দিচ্ছে মানুষ যাতে বাইরে বের হতে। কিন্তু নানা অযুহাতে অসংখ্য মানুষ বাইরে বের হচ্ছে এমনকি দেখে মনে হয় লকডাউন দেখতেই মানুষ বের হচ্ছে। কোভিড-১৯ এর শুরুর দিকে মানুষ মানলেও এখন তাদের মধ্যে নেই ভয়, শঙ্কা যদিও মৃত্যুর মিছিল বড়ো হচ্ছে।
গৌরীপুর পৌর এলাকা এখন করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে। এই শহরটিতে বর্তমানে ৩৭ জন রোগী আইসোলেশনে আছনে। আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিকভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বাজার করছেন, লোকজনের সাথে মিশছেন। অনেকে করোনার লক্ষণ থাকলেও পরীক্ষা করাচ্ছেন না, অনেকেই আবার তথ্য গোপন করছেন, জ্বর-সর্দি নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন। যে কারণে ধারণা করা যাচ্ছে না প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা কত হতে পারে!
শুক্রবার (৯ জুলাই) পর্যন্ত গৌরীপুরে মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েেছ ৭৯০টি, তন্মধ্যে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ১৮০ জন। বর্তমানে আইসোলশেনে আছেন ৮০ জন, সুস্থ হয়ছেনে ৯৬ জন, মৃত্যুবরণ করছেনে ০৪ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং উপজেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মুহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, গৌরীপুর পৌরসভায় সনাক্ত ৫৮জন, সুস্থ-২০জন, মৃত ১জন, আইসোলেশানে ৩৭জন। ১ নং মইলাকান্দা ইউনিয়নে সনাক্ত ৫জন, সুস্থ-৪জন, আইসোলেশানে ১জন। ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নে সনাক্ত ১০জন, সুস্থ-৩জন, মৃত ২জন, আইসোলেশানে ৫জন। ৩ নং অচিন্তপুর ইউনিয়নে সনাক্ত ১৫জন, সুস্থ-৭জন, আইসোলেশানে ৮জন। ৪ নং মাওহা ইউনিয়নে সনাক্ত ৮জন, সুস্থ-৬জন, আইসোলেশানে ২জন। ৫নং সহনাটি ইউনিয়ন সনাক্ত ১০জন, সুস্থ-৬জন, মৃত ১জন, আইসোলেশানে ৩জন। ৬নং বোকাইনগর ইউনিয়ন সনাক্ত ১৫জন, সুস্থ-৬জন, আইসোলেশানে ৯জন। ৭ নং রামগোপালপুর ইউনিয়নে সনাক্ত ২০জন, সুস্থ-১৬জন, আইসোলেশানে ৪জন। ৮নং ডৌহাখলা ইউনিয়নে সনাক্ত ১৫জন, সকলেই সুস্থ। ৯নং ভাংনামারী ইউনিয়নে সনাক্ত ৯জন, সুস্থ-৫জন, আইসোলেশানে ৪জন। ১০নং সিধলা ইউনিয়নে সনাক্ত ৬জন, সকলেই সুস্থ হয়েছেন। ৯ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে ৪/৫জন আইসোলেশানে রয়েছে। এ পর্যন্ত ৪ জন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
তিনি এ সময় আরো বলেন, গৌরীপুর উপজেলায় প্রতিদিনই আশংকাজনক হারে করোনার বিস্তার ঘটছে। করোনার কোন লক্ষণ দেখা দিলেই পরীক্ষা করানোর আহবাণ জানান তিনি। কঠোরভাবে করোনা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করছেন ডাঃ মুহাম্মদ রবিউল ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হাসান মারুফ বলেন, মানুষকে সচেতন করতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অনেকেই সচেতন আছে, আবার অনেকেই সচেতন হচ্ছেন। মানুষের সমাগম কমাতে মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত, নিয়মিত টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনী।