গৌরীপুরে নিবন্ধন করেও টিকা নেয়নি অনেকে, ঢিলেঢালা লকডাউন
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ০৭:৩৩, ৬ এপ্রিল, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে চলছে দায়সারা গোছের লকডাউন। কোভিড-১৯ টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেও অর্ধেক মানুষ টিকা গ্রহণ করেনি।
মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ইতোমধ্যে সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তবে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তেমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না সাধারণ মানুষের মাঝে। কিছুটা বাধ্য হয়ে দায়সারাভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার অভিনয় করছে মানুষ। লকডাউনেও নানা অযুহাতে বাইরে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। কেউ কেউ আবার ঘর থেকে বের হচ্ছেন লকডাউন দেখার জন্য! খোলা রয়েছে প্রায় সবধরণের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রশাসনের অভিযান কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালত বের হলে দোকানের সাটার ফেলে ভিতরেই বসে থাকেন দোকানীরা, চলে গেলে আবার খোলে দেয়া হয় দোকান। এযেন এক ইঁদুর-বিড়াল খেলা!
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দেখা যায় ছাত্রছাত্রীরা কোচিং বা টিউশনে পড়তে যাচ্ছে, এসময় প্রশাসন বা পুলিশের কাউকে রাস্তায় দেখা যায়নি। পৌর এলাকায় লকডাউন কিছুটা মানলেও গ্রামের বাজারগুলোতে যেন ঈদ উৎসব!
লকডাউনে অনেকেই ঢাকা, চট্রগ্রাম বা এধরনের ঝুঁকিপূর্ণ শহর থেকে ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন, তারা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ৫ এপ্রিল রাতে শাহগঞ্জ, ভুটিয়ারকোণা, কলতাপাড়া, শ্যামগঞ্জ, রামগোপালপুর, কোণাপাড়া গাছতলা বাজার, গোবিন্দপুর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মানুষ স্বাভাবিকভাবেই চা-স্টল বা দোকানপাটে আড্ডা দিচ্ছে।
লকডাউনের প্রথমদিন সোমবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবিদুর রহমান ভ্রাম্যামাণ আদালত পরিচালনা করে লক ডাউন অমান্য করায় ও দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা না থাকায় ১৩ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১৪ হাজার ২শ টাকা জরিমানা করে।
গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম জানান, উপজেলায় মোট ৫৫জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তন্মধ্যে ২জন মৃত্যুবরণ করেছেন, ৪৭জন সুস্থ্য, ৫জন হোমকোয়ারান্টাইনে ও ১জন ময়মনসিংহে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি আরও জানান, গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনার টিকা দেয়া শুরু হলে প্রথম ডোজের শেষদিন ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৮ হাজার ৪২৩ জন নিবন্ধন করেছেন, টিকা নিয়েছেন ৪হাজার ৭৩৬জন। পুরুষ ২হাজার ৭১৫ ও নারী ২ হাজার ২১জন। অর্থ্যাৎ প্রায় অর্ধেক নিবন্ধনকারী টিকা গ্রহণ করেননি। এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন করোনার টিকা নিয়ে অনেক গুজব প্রচলিত রয়েছে, তাছাড়া ১ম ডোজ নেয়ার পরও অনেকে আক্রান্ত হয়েছে, যে কারণে সাধারণ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।৮ এপ্রিল থেকে ২য় ডোজা টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। প্রথম ডোজের শেষদিন ৫ এপ্রিল হলেও ২য় ডোজের পাশাপাশি ১ম ডোজ চালু থাকার ইতোমধ্যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। প্রথম ডোজের ৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে হয়।