ঢাকা (সকাল ১০:০৯) বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

উলিপুরে লকডাউনেও ঋণের কিস্তি ছাড় দেয়নি আশা এনজিও



করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২ পর্যন্ত লকডাউন ঘোষনা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।সরকার ঘোষিত লকডাউন উলিপুরবাসী স্বাগত জানিয়েছে।তবে নিম্ন আয়ের মানুষ ঋণের কিস্তি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। লকডাউনের সিদ্ধান্তটি সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। মানুষ লকডাউন পুরোপুরি মানলে করোনা সংক্রমণের হার কমে যাবে বলে তাদের ধারণা। তবে নিম্ন আয়ের মানুষজন চিন্তিত হয়ে পড়েছে কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায়।

তবে আয় উপার্জন ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।বিভিন্ন এনজিও থেকে যারা ঋণ নিয়েছেন তারাও কিস্তি পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। লকডাউন থাকা সত্বেও উলিপুর পৌরসভায় সেই নির্দেশনা অমান্য করে রাতে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি আশা এনজিও’র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক ও ঋণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।এছাড়াও রাতে কিস্তির টাকা তোলার জন্য সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। ঠিক লকডাউনের ৪র্থ দিন বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) রাত ৯ টায় কুড়িগ্রামের উলিপুরের নারিকেল বাড়ী খেয়ার পাড় এলাকায় আশা এনজিওর উলিপুর ৩ ব্রাঞ্চের মৌচাক দলের হাসিনা,হাফেজা,রহিমা,জাহানূর ও নাসিমা কিস্তি পরিশোধের হাত থেকে রেহাই পায়নি।

পৌরসভার নারিকেল বাড়ী খেয়ারপাড় এলাকার হাসিনা খাতুনের স্বামী হাফিজুর বলেন, সামান্য ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সা চালেয়া আয় রোজগার করি। লকডাউনে যাত্রী না থাকায় এ্যাকেবারে রোজগার বন্ধ। আটোরিক্সা কিনতে মোর বউয়ের নামে আশা এনজিও থ্যাকি প্রায় ৫৬ হাজার টেকা ইণ নিচলং। সপ্তাহে ১ হাজার ৪’শ টেকার কিস্তি দেওয়া নাগে। সমস্যার কথা জানাইলেও আইতত বাড়িত আসিয়া অফিসারেরা কিস্তির টেকার জন্য চাপ দিবার নাগছে।চাপত পড়িয়া ৮’শ টেকা কিস্তি দিলোং আরো বাকী অইলো ৬’শ টেকা তোমরা তো নিজে চোখে দেখলেন। তোমাক দেখি বইতো টেকা না তুলিয়া চলি গ্যালো।

একই এলাকার ওই আশা’র সদস্য জাহানূর বেগমের স্বামী নজির হোসেন বলেন, ব্যবসার জন্য আশা থেকে ঋণ নিয়ে ছিলাম। কিন্ত লকডাউনের কারণে আমার আয় কম হওয়ায় টাকা পয়সার অভাবে পড়েছি। এমন অবস্থায় আশার মাঠ কর্মীরা রাতে ঋণের কিস্তির টাকার চাপ প্রয়োগ করছে।বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে এসে তারা টাকা ছাড়া উঠে না।

এদিকে ওই আশা’র সদস্য হাফেজা বেগমের স্বামী বলেন, চাউলের বস্তা শ্যাষ চাউল কেনার টেকা নাই চাপত পড়ি কিস্তি পরিশোধ করনো। আরও এক সদস্য নাসিমার শ্বাশুরি সালেহা বেগম বলেন,মোর ছাওয়াটা অটোরিক্সা চালেয়া আইজ মাত্র ৮০ টেকা কামাই করছে কিস্তির চাপত পড়িয়া সঞ্চয়ের টেকা ভাঙ্গেয়া কিস্তি দিলে।

শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল ও ঋণ কর্মকর্তা রুহুল আমিন দাম্ভিকতার সাথে সাংবাদিককে বলেন, আপনি কে? দেখি আপনার কার্ড! চলেন অফিসে ওখানে গিয়ে বলেন। লকডাউনে কিস্তির টাকা তোলার কোন বিধি নিষেধ নাই তাই রাতে কিস্তি নিতে এসেছি।

এব্যাপারে আশা এনজিওর উলিপুর ব্রাঞ্চের শাখা ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে জানান,আমি ওনাদের রাতে সদস্যদের বাসায় যেতে বলিনি বিষয়টি দেখতেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন,বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক কিস্তি পরিশোধের ব্যাপারে প্রতিটি এনজিওর সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT