শিশু নাহেল হত্যা ফ্রান্স জুড়ে তোলপাড়
জামিল আহমদ, ফ্রান্স সোমবার সকাল ১০:৪২, ৩ জুলাই, ২০২৩
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী নাহেল নামে এক আলজেরীয়-বংশোদ্ভূত তরুণ নিহত হওয়ার পর থেকে গত চার রাত ধরে ব্যাপক সহিংসতা চলছে। ফ্রান্সজুড়ে চলা এই সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৭৯ পুলিশ সদস্য আহত, ১৩০০ জনকে গ্রেফতার, ১৩৫০ যানবাহন পোড়ানো ও ২৬০ টি বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে বলে কাতার ভিত্তক সংবাদ পত্র সিএনএনকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন। ফ্রান্সের বিভিন্ন এলাকাতে ৩ জুলাই পর্যন্ত রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এর আগে প্যারিসের পশ্চিম দিকে নান্তেরে এলাকায় নাহেল এম নামের এক তরুণ মঙ্গলবার গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাফিক পুলিশ তাকে থামতে বলে। সে না থামলে পুলিশ খুব কাছে থেকে তাকে গুলি করে। পরে আহত নাহেলকে চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো যায়নি। আটক করা হয়েছে গুলি চালানো সেই অফিসারকে।
তার মা মুনিয়া সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন– ‘নাহেল সকাল বেলাও বলছিল , ‘মা আমি তোমাকে ভালোবাসি’, তারপর আমি কাজে যাই, এর এক ঘণ্টা পর একটা ফোন পাই—আমাকে বলা হয়, আমার ছেলেকে গুলি করা হয়েছে।’
এ ঘটনার প্রতিবাদে প্যারিসসহ গোটা ফ্রান্স জুড়ে বিক্ষোভ ও সহিংসতা শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশ স্টেশনেও আগুন দেয়। ফ্রান্সজুড়ে প্রায় ৪০ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা এই বিক্ষোভ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
বিবিসি জানায়, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার নাহেলের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তার আইনজীবী বলেছেন মক্কেলের অবস্থা বেগতিক। এ ঘটনায় নাহেলের মা পুরো পুলিশ বাহিনী নয় বরং শুধু তার ছেলেকে হত্যা করা পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন।
ফ্রান্সের বিভিন্ন এলাকাতে দোকানপাট ভাংচুর-লুট, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীরা সুপার মার্কেট, মোবাইলের দোকান, পোশাকের দোকান, খাবারের দোকান সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে লুট করছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ নিহত হওয়ার ঘটনাকে ক্ষমার অযোগ্য বলে মন্তব্য করে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।