চাঁপাইনবাবগঞ্জে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজির প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রামবাসীর মানববন্ধন
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ বুধবার রাত ০৯:৪৩, ২৮ জুলাই, ২০২১
অসহায়-দরিদ্র চা বিক্রেতার পক্ষে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজির প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বুধবার (২৮ জুলাই) দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার মনকষা-চৌধুরীপাড়া বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অকারণে অসহায় চা বিক্রেতার দোকান ভেঙ্গে দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও গ্রামবাসী। এ নিয়ে অসহায় দোকানী প্রতিকার চেয়ে শিবগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, আওয়ামীলীগ নেতা কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর জমিতে গত ১০-১২ বছর ধরে অস্থায়ী চায়ের দোকান স্থাপন করে সংসার চালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা চা দোকানী মো. মনিরুল ইসলাম। কিন্তু গত এক বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ শিবগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের ভাই সোহেল আহমেদ পলাশ বিভিন্নভাবে চা দোকানী মো. মনিরুল ইসলামকে হয়রানি করছে। এমনকি সাংসদ ও সাংসদের ভাইয়ের লোকজন চা খেয়ে কোন বিলও পরিশোধ করেনা।
বক্তারা আরও বলেন, গত পরশুদিন সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সোহেল আহমেদ পলাশের নির্দেশে তার লোকজন চায়ের দোকানটিতে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এমনকি চা দোকানী মনিরুল ও তার ছেলে রাব্বানীকেও ব্যাপক মারধর করে তারা। দোকানের জায়গা নিয়ে জমির মালিক কাইয়ুম রেজা চৌধুরী ও তার উত্তরসূরীদের কোন অভিযোগ না থাকলেও বিল না দিয়ে উল্টো চাঁদা চেয়ে না পেয়ে ভাংচুর চালায় তারা।
এ বিষয়ে মানববন্ধনে চা দোকানী মনিরুল ইসলাম বলেন, উপরে পলেথিন দিয়ে দীর্ঘ এক যুগ থেকে চা ও বড়ার অস্থায়ী দোকান দিয়ে সংসার চালাচ্ছি। কিন্তু সোমবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে এমপি শিমুলের ভাই সোহেল আহমেদ পলাশ তার লোকজন নিয়ে চা ও বড়া খাওয়া শেষে চলে যাওয়ার সময় বিল চাইতে গেলে উল্টো আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। আর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দোকান থেকে আমাকে উঠিয়ে নিয়ে মারধর করে। এর আগেও এখানে দোকান চালাতে হলে ২০ হাজার টাকা দিতে নানাভাবে চাপ দেন, তা না হলে দোকান থাকবে না বলেও হুশিয়ারী দেন।
তিনি আরও বলেন, আমাকে ধরতে আসলে আরও কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে সোহেল আহমেদ পলাশের লোকজন। এ সময় মনকষা বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। বিনা অপরাধে আমার খেটে খাওয়ার একমাত্র অবলম্বন ভাংচুর করেছে তারা। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এমনকি নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও শংকিত আমি।
এ বিষয়ে এমপি ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের ভাই ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিএ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ পলাশের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মেশবাহুল আলম মেসবাহ, মনাকষা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান খান, চা দোকানদার মনিরুলের ছেলে রাব্বানী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, শিবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল করিম, মনাকষা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজাসহ স্থানীয় অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী।