গৌরীপুরে চুরির অপবাদে শিশু নির্যাতন,এলাকায় তোলপাড়
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ বৃহস্পতিবার রাত ১১:২৩, ১০ জুন, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে রিফাত (৯) নামে এক দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে ফাতেমা বেগম নামের এক নারী ও তার ছেলে হিমেল। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ঘুরছে। নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তুমুল তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ঘটনাটি শুক্রবার (৪ জুন) দুপুরে রামগোপালপুর ইউনিয়নের মধুবন আদর্শ গ্রামের (গুচ্ছগ্রাম) এ ঘটনা ঘটে। তবে, বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝেই গোপন থাকে।পরে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) শেয়ার দিলে জানাজানি হয়।
নির্যাতনের শিকার রিফাত রামগোপালপুর ইউনিয়নের মধুবন আদর্শ গ্রামের (গুচ্ছগ্রাম) সুরুজ মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় রামগোপালপুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণীতে পড়ালেখা করে।
অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম ডৌহাখলা ইউনিয়নের তাঁতকুড়া গ্রামে মৃত বারেক ডাকাতের স্ত্রী ও ফাতেমার ছেলে হিমেল (২৫)।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার রিফাতের বাবা সুরুজ মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, গতমাসের শেষের সপ্তাহে ফাতেমা বেগমের ভাইয়ের স্ত্রী রিফাতকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গাছ থেকে আম পেড়ে দিতে বলে। পরে রিফাত আম পাড়ার জন্য গাছে উঠলে ফাতেমা ও তার ছেলে হিমেল রিফাতকে পিটিয়ে পিটিয়ে গাছ থেকে নামায়। এরপর থেকে রিফাত সপ্তাহখানেক জ্বরে ভোগে।
তিনি আরও বলেন, জ্বর কিছুটা সেরে উঠলে শুক্রবার (৪ জুন) আমি বাড়িতে না থাকায় ফাতেমার ছেলে হিমেল রিফাতকে বাড়ি থেকে নিয়ে গাছের সাথে গরুর রশি দিয়ে বেধে মারধর করে। পরে আমি বাড়িতে ফিরে বিষয়টি জানতে পেরে রিফাতকে তাদের বাড়িতে গিয়ে রশি খুলে বাড়িতে নিয়ে আসি। এরপর গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিগনকে জানালে বিচারের আশ্বাস দেয়।
তিনি এ সময় আরো বলেন, রিফাতের মা ৫ বছর আগে সৌদি আরবে যায়। এরপর থেকে ছেলেমেয়েকে নিজেই মায়ের মত লালনপালন করেছি। আমি বাড়ির বাইরে কাজে গেলে স্থানীয়রা বিভিন্ন কাজ করায়। প্রতিবেশিরাও ছেলেকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে মধুবন আদর্শ গ্রামের (গুচ্ছগ্রাম) সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, আমি নির্যাতনের বিষয়টি মঙ্গলবার জানতে পেরেছি। গতকাল বিষয়টি নিয়ে বসার কথা ছিল। তবে, বসা হয়নি। তিনিও এই নির্যাতনের সঠিক বিচার দাবি করেন।
নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ফাতেমা বেগম। তবে, তার ছেলে হিমেল নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার ঘর থেকে মোবাইল চুরির করার অপরাধে তাকে ধরে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছিলাম। পরে রিফাতের বাবা আমার বাড়িতে এসে আমাকে পিটিয়ে ছেলেকে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, অভিযুক্ত দুই জনকে আটক করা হয়েছে।