ঢাকা (রাত ১১:৪৩) রবিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম

কথিত সাংবাদিক সালমার গ্রেফতারে জনমনে স্বস্তি, মিষ্টি বিতরণ

স্টাফ রিপোর্টার স্টাফ রিপোর্টার Clock রবিবার দুপুর ০২:০৯, ৩১ আগস্ট, ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে আড়াল করে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসা কথিত সাংবাদিক সালমাকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার বিরুদ্ধে আনীত একাধিক অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে, সাংবাদিক সমাজে সৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিক পরিবেশ। এমনকি দাউদকান্দি পৌরসভায় সালমার গ্রেফতারের খবরে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।

 

পরিচয়ের আড়ালে প্রতারণা:

ফেসবুকে নামের আগে ‘সাংবাদিক’ লিখে এবং নামসর্বস্ব কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকার পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে সালমা দীর্ঘদিন দাপট দেখাতেন। প্রকৃতপক্ষে কোনো স্বীকৃত গণমাধ্যমের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল না। এই ভুয়া পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে তিনি সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতেন, অর্থ আদায় করতেন এবং নানা ধরনের প্রতারণা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

তার কার্যকলাপে পেশাদার সাংবাদিকরাও অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। আদালতপাড়ায় ঘুরে বেড়ানো, পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করা এবং নারীত্বকে পুঁজি করে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায় থানার কর্মকর্তারাও অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তেন।

 

একাধিক অভিযোগ ও তদন্ত

দাউদকান্দি, তিতাস ও কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় সালমার বিরুদ্ধে একাধিক ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দেন। এসব অভিযোগে উল্লেখ করা হয়—তিনি নিয়মিত চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন।

 

একাধিক প্রেমঘটিত সম্পর্ক তৈরি করে ব্ল্যাকমেইল করতেন।

 

একাধিক বিয়ে করে কাবিননামার মাধ্যমে পরে ডিভোর্স দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন।

 

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালতে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় গত সপ্তাহে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

সাংবাদিক সমাজের প্রতিক্রিয়া:

তার গ্রেফতারের খবরে প্রথমে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। দাউদকান্দি, তিতাস, হোমনা ও কুমিল্লার সাংবাদিকরা একযোগে সংবাদ প্রচার করেন। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকেও প্রতিবেদককে ধন্যবাদ জানানো হয়।হোমনা উপজেলার দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক আবুল কাশেম নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দিয়ে এ ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালতকে ধন্যবাদ জানান।

এছাড়াও বহুল প্রচারিত দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক ভোরের সূর্যোদয় পত্রিকায় সালমার কর্মকাণ্ড নিয়ে বড় আকারে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

 

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য:

সালমার মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া ভুক্তভোগী সোহরাব হোসেন গণমাধ্যমকে জানান “আমি মিথ্যা মামলায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলাম। আজকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।”

 

আরও অনেক ভুক্তভোগী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, সালমার মতো ভুয়া সাংবাদিকদের কারণে আসল সাংবাদিকদের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়।

 

জনমনে স্বস্তি ও আনন্দ:

সাধারণ মানুষ ও সুশীল সমাজের মধ্যে স্বস্তির পাশাপাশি আনন্দ প্রকাশ পায়। দাউদকান্দি পৌরসভায় স্থানীয় বাসিন্দারা মিষ্টি বিতরণ করে এই সংবাদকে স্বাগত জানান। স্থানীয়রা বলেন, বহুদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটল।

 

কথিত সাংবাদিক সালমার দৃষ্টান্তমূলজ শাস্তির দাবি জানান ভুক্তভোগীরা:

একটি নামসর্বস্ব পরিচয়ের আড়ালে বছরের পর বছর মানুষকে হয়রানি করা সেই সালমা অবশেষে কারাগারে। তার গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে জনমনে যেমন স্বস্তি নেমে এসেছে, তেমনি ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। ভুক্তভোগীরা এখন কেবল একটাই দাবি তুলেছেন—তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে সমাজকে কলুষিত করতে না পারে।

 

কথিত সাংবাদিক সালমা দাউদকান্দি উপজেলার পুদয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দা গ্রামের সালাম সরদারের মেয়ে।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShasTech-IT