উলিপুরে বৈরী আবহাওয়ায় পচে নষ্ট হচ্ছে খড়;গো-খাদ্য সংকটের আশঙ্কা
সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম শনিবার রাত ০১:৪৩, ২৮ মে, ২০২২
সারা দেশের ন্যায় কুড়িগ্রামের উলিপুরে বৈরী আবহাওয়াতে, কষ্ট করে বোরো ধান শুকিয়ে ঘরে তুলতে পারলেও, খড় সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি কৃষকদের। রাস্তা-ঘাট ও মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য খড়। খড়গুলো ঠিকমতো শুকিয়ে মজুদ করতে না পারলে খামারি ও সাধারণ গরু পালনকারীরা বেকায়দায় পড়বেন।
প্রতি মৌসুমেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান সংগ্রহের পাশাপাশি গো-খাদ্যের জন্য খড় শুকিয়ে মজুদ করে রাখেন। এবার বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আগেভাগেই ধান সংগ্রহের ব্যস্ত ছিল কৃষকরা। তাই খড়ের দিকে খুব একটা নজর দিতে পারেনি তারা।
এ কারণে কৃষকের নিকট গরুর খাদ্য খড় মজুদ নেই। ফলে আগামী ১-২ মাস পরই এলাকায় গো-খাদ্যর চরম সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গরু পালনকারীরা। গৃহপালিত এসব গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য খড় যোগানে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকার কৃষকেরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বোরোধান মাড়াই করে সড়কের দুই পাশ দিয়ে খড় স্তুপ করে রেখেছে কৃষকরা। বৃষ্টির পানিতে ভিজে খড় পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
পৌর শহরের ৪ নং ওয়ার্ডের কৃষক আমজাদ হোসেন, এরশাদুল হক ও রানাসহ অনেকে বলেন, কষ্ট করে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে ধান শুকিয়ে ঘরে তুলেছি। কিন্তু রোদের অভাবে খড় এখনো শুকাতে পারি নাই। ফলে খড়ের আটিগুলোতে ছাত্রাক ধরেছে যা নষ্ট হওয়ার পথে। দুই একদিনের মধ্যে রোদে শুকাতে না পারলে খড়গুলো ফেলে দিতে হবে।
পৌর শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের কৃষক আব্দুল সাত্তার, জসিম উদ্দিন, আব্দুল ও রশিদ জানান, কষ্ট করে ধান শুকালেও খড় শুকানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। খড় থেকে এখন গন্ধ বেরোচ্ছে, এই পচা খড়গুলো শুকালেও আর গরু খেতে চাইবে না।
ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের কেকতীর পাড়ের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, পোয়াল (খড়) আধা শুকনা (শুকানো) করে ঢিপি (গাদা) দিয়া ভূইতে (জমিতে) রাখছি ভূইত এলা এক হাটু পানি ওটটে (ওখানে) পোয়াল পচি (পচে) যাবার নাগছে (যাচ্ছে)।
উপজেলার ধানশ্রেণী ইউনিয়নের কাশিয়াগাড়ি এলাকার খামারি মানু জানান, দিন দিন গরুর ভূষির দাম কয়েক দফা বেড়েছে। গত এক মাসের ব্যবধানে প্রতি বস্তা ভূষিতে ৮০০ থেকে হাজার টাকা বেড়েছে। খাদ্য সংকটে থাকলে আগামী কোরবানির ঈদে, গরুর কাঙ্খিত দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় আছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ানুর হক বলেন, বর্ষায় খড়ের তেমন ক্ষতি এখনও হয়নি। এই সমস্যাটা ক্ষণস্থায়ী। আশাকরি কৃষকরা এ সংকট কেটে উঠবে। এছাড়াও আমরা ঘাস চাষের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি, আশা করি দ্রুত এই কার্যক্রম চালু করা হবে।