উলিপুরে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতার বিরুদ্ধে ২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ আটক ৩
সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম শুক্রবার রাত ১০:৫৩, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রশাসন ও ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীর দুই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ।এ ঘটনায় ব্যবসায়ী প্রদীপ বণিক বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামী করে শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারী) বিকালে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৩)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর কোতয়ালী থানার কামাল কাছনা গ্রামের সম্ভুনাথ বণিকের ছেলে ওয়েষ্ট পেপার ব্যবসায়ী প্রদীপ বণিক (৩৫) গত বৃহস্পতিবার রাতে তার একজন কর্মচারীসহ মোটর সাইকেল যোগে ব্যবসায়ীক কাজে রংপুর থেকে উলিপুর উপজেলার বজরা বাজারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে রাত ১১টার দিকে উলিপুর পৌরসভার রামধাস ধনিরাম হাজীপাড়া এলাকায় পৌঁছিলে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম নাঈম (২২) ও উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি সরদার রতন (২৪)সহ ৬জন যুবক ওই ব্যবসায়ীর মোটর সাইকেলের গতিরোধ করেন। এরপর তারা নিজেদেরকে প্রশাসন ও ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে অবৈধ মালামাল রাখার অভিযোগ তুলে ওই ব্যবসায়ী এবং কর্মচারীর শরীর তল্লাশি করেন। এ সময় ব্যবসায়ীকে মারপিটের ভয় দেখিয়ে তার ব্যাগে থাকা দুই লাখ টাকা জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়ার সময় ব্যবসাীয়র আত্মচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে তারা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে চিনে ফেলে।
এর কিছু সময় পর ছিনতাইকারীরা ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া তাদের একটি মোটর সাইকেল নিতে আসলে এলাকাবাসী দুইজনকে আটক করে পুলিশে দেন। পরে শুক্রবার বিকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরো একজনকে আটক করেন। আটকৃতরা হলেন, পৌরসভার নারিকেলবাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আহসান হাবিব বাবু (২৪), আব্দুল হামিদের ছেলে সাদেকুর রহমান দুলু (২৮) ও পশ্চিম কালুডাঙ্গা গ্রামের ছাবেদ আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (২৫)। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামীরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম নাঈম (২২) ও উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি সরদার রতন (২৪) এবং উপজেলা বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের যুগ্ন তৌফিক আলম চৌধুরী (২২)।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনেছি। অপরাধী যেই হোক তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। নাঈমের বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক প্রমান হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রুবেল বলেন, কোন অপরাধীর স্থান ছাত্রলীগে নেই। নাঈম দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আবু জাফর মো. মঈনুল হক বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। যদি এমনটা হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারো ব্যক্তিগত কর্মকান্ডের দায়ভার সংগঠন নেবে না।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে শুক্রবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।