যশোরে ভূয়া এনজিওর ম্যানেজার আটক, থানায় ভুক্তভোগীদের ভীড়
মোরশেদ আলম,যশোর শনিবার বিকেল ০৪:৩৭, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
যশোরের বাঘারপাড়ায় সূর্যের আলো সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে এক ভুয়া এনজিও’র ম্যানেজারকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ম্যানেজারের উপজেলার দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে আসলাম হুসাইন। প্রতারণার শিকার শতাধিক নারী-পুরুষ তার আটকের সংবাদ শুনে সঞ্চয় ফেরত পেতে থানায় ভীড় জমায়।
জানা গেছে, গত কয়েক মাস আগে বাঘারপাড়া চৌরাস্তা মোড়ে সূর্যের আলো সমবায় সমিতি লি: নামে একটি সংস্থা তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ১০ জন মহিলা মাঠ কর্মীর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তারা সঞ্চয় সংগ্রহ শুরু করে। কয়েক মাস পার হলেও কোন ঋণ না দেওয়ায় সঞ্চয় জমাকারীরা ব্যস্ত হয়ে ওঠে। প্রশ্ন ওঠে সংস্থাটির বৈধতা নিয়ে।
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সংস্থাটি অবৈধ। ঋণ কার্যক্রম চালানোর জন্য সরকাররের কোন দপ্তর থেকে তাদের কোন অনুমতি নেই। এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর ভুয়া এনজিও’র কর্মীরা অফিস বন্ধ রেখে পালিয়ে যায়। এরপর বিপদে পড়েন সঞ্চয় সংগ্রহকারী মহিলা কর্মীরা। সঞ্চয় জমাকারীদের চাপে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। এরপর তারা কয়েক’শ গ্রাহকের জামানতের টাকা ফেরতের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ প্রতারক আসলামকে আটক করে। এ খবর পেয়ে প্রতারণার শিকার শতাধিক মানুষ বাঘারপাড়া থানায় ভীড় জমায়। ভুক্তভোগী এসব মানুষ তাদের সঞ্চয় ফেরত পাওয়ার জন্য থানার ওসির কাছে জোর দাবি জানান।
প্রতারণার শিকার উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের শিমলা খাতুন (সঞ্চয় সংগ্রহকারী) জানান, ‘সুর্যের আলো সমবায় সমিতি লিঃ থেকে ঋণ নেওয়ার আশায় কয়েকজন আমার কাছে লক্ষাধিক টাকা জামানত দিয়েছে। আমি সে টাকা আসলাম ভাইয়ের কাছে জমা দিয়েছি।’
একই রকম বিপদে পড়েছেন ইন্দ্রা গ্রামের সুরাইয়া খাতুন। তিনিও প্রায় ২ লাখ টাকা জামানত দিয়েছেন আসলামের কাছে। সুরাইয়া জানান, গত চার মাস ধরে আসলাম ঋণ দেওয়ার কথা বলে আমাদের ঘোরাচ্ছেন।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুন জানান, ‘উপজেলার দক্ষিণ শ্রীরামপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসলামকে আটক করা হয়। আটকের সংবাদ পেয়ে জামানতের টাকা ফেরত চেয়ে শতাধিক গ্রাহক থানায় জড়ো হয়। গ্রাহকদের কাছ থেকে হিসাব নেওয়া হচ্ছে ভুয়া সংস্থাটি কত টাকা নিয়েছে। গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’