উলিপুরে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়ম
সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম সোমবার বিকেল ০৪:২৮, ২ মে, ২০২২
উলিপুরে ধামশ্রেনী ইউনিয়নে ঈদ উপলক্ষে হতদরিদ্র ও দুঃস্থদের মাঝে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাল বিতরণে নেয়া হয়েছে অনিয়ম, দুর্নীতি আর কৌশল। চেয়ারম্যানের মদদে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইউপি সদস্যরা যে যার মতো ভিজিএফ এর চাল উত্তোলন করে করে যেখানে সেখানে নিজেদের পছন্দমত লোকদের মাঝে চাল বিতরণ করছেন। এ যেন অনিয়মই নিয়মে পরিণত করেছেন ইউএনও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম আর তা ফ্যাল ফ্যালিয়ে তাকিয়ে দেখছেন নিয়োগকৃত ট্যাগ অফিসার। শুধু তাই নয় চালও ছিল তিন ধরনের। চিকন, মোটা ও পোকা ধরা নিম্নমানের চাল। বস্তাগুলো ছিলো নিম্নমানের পরিবহন করতেই চাল বেরিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকার সূধিজন ও প্রকৃত সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে ঈদুল-ফিতর উপলক্ষে ধামশ্রেনী ইউনিয়নে ৫ হাজার ২১০ জনকে ১০ কেজি করে ৫২১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। আর তা ওই ইউনিয়নে স্থায়ীভাবে বিভাজন করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর সেই সুযোগে চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যরা চাল বিতরণের নামে মাস্টার রোল তৈরি করে নেয় দুর্নীতির আশ্রয় আর এই দুর্নীতির সঙ্গে সঙ্গত হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও।
জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে ধামশ্রেনী ইউপি চেয়ারম্যান ঈদ উপলক্ষে হতদরিদ্র ও দুঃস্থদের মাঝে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে জন্য অসৎ উদ্দেশে তার নিজ এলাকায় বিঞ্চুবল্লভ কমিউনিটি ক্লিনিকে আত্মীয় স্বজন ও পছন্দমত লোকদের মাঝে চাল বিতরণ করেন। অথচ ইউপি খাদ্য গুদাম থেকে সব চাল বিতরণের নিয়ম থাকলেও নামকাওয়াস্তে তা বিতরণ করা হয়েছে।
নাম না বলা শর্তে কয়েকজন সু্বিধাভোগি ভিজিএফ এর অনুমোদিত আইডি কার্ড হাতে নিয়ে সাংবাদিকদের জানান, সামান্য দশ কেজি চালের জন্য তিন-চার দিন থেকে ঘুরছি কিন্তু চেয়ারম্যান আমাদের চাল দিচ্ছে না।
১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান দুলাল মিয়া ও ০৮ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিভিন্ন এলাকায় চাল বিতরণের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা রিস্ক নিয়ে চাল বিতরণ করেছি।
খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) শাহিনুর রহমানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেন নি।
নিয়োগকৃত ট্যাগ অফিসার উপজেলা পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প অফিসার রিয়াজুল হক বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদে এসে দেখি সেখানে চাল বিতরণ না করে বিঞ্চুবল্লভ কমিউনিটি ক্লিনিকে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। বিষয়টি আমি সঙ্গে সঙ্গে ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। তিনি আমাকে বলেছেন দুই জায়গায় বিতরণে আপনার সমস্যা হলে এক জায়গায় বিতরণ করেন।
এ ব্যাপারে ধামশ্রেনী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে জায়গা হয় না। বিতরণের সুবিধার্থে ইউএনও স্যারের অনুমতি সাপেক্ষে দুই জায়গায় চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার দুই জায়গায় চাল বিতরণের অনুমতি দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব অনুমতি চেয়েছিলেন আমি দেইনি। সুবিধাভোগী দের চাল না দিয়ে ঘুরানো দুঃখজনক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।