সর্বস্তরের মুসল্লিদের অশ্রু সিক্ত ভালবাসায় সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সিদ্দিকীর শেষ বিদায়
ইবাদুর রহমান জাকির,সিলেট শনিবার দুপুর ০৩:৪৩, ১৪ আগস্ট, ২০২১
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রখ্যাত আলেম ও ইসলামের খেদমতকারী, সৈয়দ শাহ্ মোস্তফা টাউন কামিল মাদ্রসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সিদ্দিকী আর নেই।
১২ই আগষ্ট দিবাগত রাত ১-৩০ মিনিটে মৌলভীবাজার শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মরহুমের প্রথম নামাজে যানাজা শুক্রবার ১৩ আগষ্ট বেলা ২.৩০ ঘটিকায় হযরত সৈয়দ শাহ্ মোস্তফা (র:) পৌর ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। করোনা আতঙ্ক উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
যানাজার নামাজ পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন,মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, বাংলাদেশ অঞ্জুমানে আল ইসলাহ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাওলানা হুসাম উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, জেলা পরিষেদের চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান, পৌর মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান, সিনিওর সাংবাদিক ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য বকসী ইকবাল আহমদ, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, সৈয়দ শাহ্ মোস্তফা টাউন কামিল মাদ্রসার অধ্যক্ষ মাওলানা সামছুল ইসলাম সহ অন্যন্যরা।
পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মরহুমের পুত্র তানজুম আহমদ সিদ্দিকি। নামাজে যানাজায় ইমামতি করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম সাহেব কিবলা ফুলতলীর দ্বিতীয় ছেলে মাওলানা নজমুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী।
যানাজার নামাজে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন মাদ্রসার ছাত্র-শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি সহ সর্বস্থরের মানুষ ঢল নামে প্রখ্যাত আলেম ও ইসলামের খেদমতকারীকে এক নজর দেখার জন্য।
পরে মরহুমের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিজ এলাকা বড়লেখা উপজেলার মুরাউল গ্রামে। সেখানে বাদ আছর ২য় নামাজে যানাজা শেষে পারিবারিক কবস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করার কথা রয়েছে।
আল্লামা আব্দুল কাইয়ূম সিদ্দিকী ১৯৫৪ সালে বড়লেখা উপজেলার মুড়াউল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশুনা সম্পন্ন করে বিভিন্ন মাদরাসায় তিনি শিক্ষকতা করেন। মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ হিসাবে ৩৪ বছর দায়িত্ব পালন করে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুযুর্গ আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী (র.) নিকট থেকে ইলমে তরিকতের তালিম নেন এবং তার নিকট থেকে খেলাফতি লাভ করেন।
সাংগঠনিকভাবে তিনি আনজুমানে আল-ইসলাহ মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব দীর্ঘদিন পালন করেন ও কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ছিলেন। এছাড়া মাদরাসায় অধ্যক্ষ থাকাকালীন মাদরাসা শিক্ষকদের সংগঠন জমিয়তুল মোদার্রেছীনেরও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সুদীর্ঘকালের শিক্ষকতার জীবনে হাজার হাজার মুফতি, মাওলানা, মুহাদ্দিস ও ফকিহ তৈরি করেছেন। বৃহত্তর সিলেটের প্রায় সকল আলিয়া মাদরাসায় তার ছাত্ররা শিক্ষকতা করছেন।
জমিয়তুল মোদার্রেছীনের শোক প্রকাশ:-
আল্লামা আব্দুল কাইয়ূম সিদ্দিকীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জমিয়তুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন ও মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজি। এক শোক বার্তায় তারা বলেন, মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম সিদ্দিকী ছিলেন জমিয়তুল মোদার্রেছীনের একজন অভিভাবক। বয়োজেষ্ঠ্য এ আলেমে দ্বীন দীর্ঘদিন দ্বীন ইসলামের খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। বিভিন্ন মাদরাসার পৃষ্ঠপোষকতা ও শিক্ষা সম্প্রসারণে তার অবদান অনস্বীকার্য। তারা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে তার মাগফিরাত কামনা করেন।
এদিকে তাঁর মৃত্যুতে কেন্দ্রীয় আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী ও মহাসচিব অধ্যক্ষ একেএম মনোওর আলী, মৌলভীবাজার জেলা আল ইসলাহর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শামছুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল আলিম শোক প্রকাশ করেছেন।