আয়কর অফিসের নাইটগার্ড সরোয়ার এখন কোটিপতি
মীর এম ইমরান,মাদারীপুর রবিবার সন্ধ্যা ০৬:১৪, ৮ আগস্ট, ২০২১
স্থানীয়রা জানেন তিনি আয়কর অফিসের অফিসার। কথাবর্তায় চলন বলনে অফিসারের মতোই। মাদারীপুর জেলা অফিসের কাউকে পরোয়া করেন না। মাদারীপুর শহরের ব্যবসায়ী তার ভয়ে সব সময় তটস্ত থাকেন। ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নেন এক লাখ টাকা। সেই ভিডিও এসেছে এই প্রতিবেদকের কাছে। ভিডিওতে দেখা যায় মাদারীপুর শহরের এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লাখ টাকা নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, সরোয়ার নিজেকে আয়কর অফিসের অফিসার পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তার বাবা একজন কৃষক হলেও তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি এলাকায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন। স্থানীয়দের তথ্য মতে ঢাকাতেও রয়েছে তার নামে বেনামে বিপুল পরিমান সম্পদ। তিনি নাইট গার্ড এর চাকুরী করলেও খুলেছেন আয়কর ফাইল। কোথায় পেলেন তিনি এতো টাকা? এর সদোত্তর নেই তার কাছেও। অভিযোগ উঠেছে, চাকরী নাইটগার্ডের পদে হলেও কখনও রাতে তিনি অফিস পাহারা দেন না। অর্থবিত্ত ও টাকার জোরে তিনিই এখন মাদারীপুর আয়কর অফিসের নিয়ন্ত্রক। এব্যাপারে জানতে মাদারীপুর আয়কর অফিসে গেলে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
এরপরে মাদারীপুর আয়কর অফিসের উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ না করে অর্থ প্রদানের প্রলোভন দেখান। সেই সাংবাদিক ফোনে বলেন, ‘আপনারা গেছেন আপনাদের একটা খরচের ব্যবস্থা করি। আপনাদের একটা ভালো এমাউন্ট ধরাই দিমুনে।’
এব্যাপারে নাইট গার্ড সরোয়ার বলেন, ‘আমি অফিস সহায়ক। স্থানীয় ও আমার আত্মীয় স্বজনরা কর রির্টান সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যার কারণে আমার কাছে আসে। আমি আত্মীয়তার কারণে তাদের দুই চারটি কাজে সহযোগিতা করি। এখানে আমার তো কোন ভুল নাই।’ তিনি আরও বলেন, আমার দুই তলা ব্লিল্ডিংসহ এলাকার জায়গা জমি আমার পারিবারিক। তার নামে যে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে তা ভিত্তিহীন বলেও তিনি দাবি করেন।’
জানতে চাইলে মাদারীপুর আয়কর অফিসের উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘সরোয়ার ঢাকা আয়কর অঞ্চল ৭ একজন নাইটগার্ড। মাদারীপুরে অফিসের কাজে আসলে সেই সুবাধে কথা হয়। তাকে আমি চিনি। তবে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট স্যারদের জানিয়েছি। তিনি জেলায় থেকে কারো ফাইল করা বা ভয় ভীতি দেখানোর কোন সুযোগ নেই। যদি এটা তিনি করে থাকেন তিনি অন্যায় করেছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’