হঠাৎ করে বেড়েছে তিস্তার পানি, দুর্ভোগে বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারা
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার রাত ১১:২০, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
ঈশাত জামান মুন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : উজানে ক্রমাগত ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে হঠাৎ করেই বেড়েছে তিস্তা নদীর পানি। আকস্মিক পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা অববাহিকার বসতবাড়ি ও আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত পরিবারগুলো বসতঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানে।
বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ৯টায় পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৫২.৭০ (বিপদসীমা ৫২.৬০) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার গুড্ডিমারী ইউপি সহ সানিয়াজান ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রামে ইতিমধ্যে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। সানিয়াজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর জানান, তার ইউনিয়ন এর চর ঠ্যাংঝাড়া দক্ষিণ পাড়া, আরাজী শেখ সুন্দর গ্রামে নদীর নালার মাধ্যমে ইতিমধ্যে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বসতবাড়ি গুলোর মধ্যে দিয়ে হাঁটু সমানপানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন হঠাৎ করে তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। উপজেলা প্রসাশন হতে এখন প্রযন্ত কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি।
এদিকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর, টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দোলাপাড়া, তিস্তা বাজার, চরখড়িবাড়ি, পূর্বখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী ইউনিয়নের বানপাড়া ছোটখাতা, বাইশপুকুর ও ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের সোনাখুলী, ফরেস্টের চর গ্রামগুলোর বসতঘরে নদীর পানি প্রবেশ করেছে।
বসতঘরগুলোর ভিতর দিয়ে হাঁটুসমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেকে নদীর ডানতীরের বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
পুর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবারের বসতঘরে বন্যায় তলিয়ে গেছে।
টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মইনুল হক বলেন, তার এলাকার দোলাপাড়া, তিস্তাবাজার, চরখড়িবাড়ি, পূর্বখড়িবাড়ি, পশ্চিমখড়িবাড়ি ( বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন) গ্রামগুলোর বাড়িঘরে হাঁটুসমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, ছোটখাতা ও বানপাড়া গ্রামের মানুষজন ডানতীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ছাতুনামা ও ফরেস্টের চর এলাকায় ৫ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করে। বন্যার কবলে নিচু এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উজানে ভারী বৃষ্টি ও ঢলের কারণে তিস্তা নদীতে পানি হু হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
রাত ৯টায় তা বিপদসীমা অতিক্রম করে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট।
বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পরিবারগুলোকে উঁচু স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।