সাপাহারে কৃষকের শতশত বিঘা জমির সোনালী ফসল পানির নিচে
গোলাপ খন্দকার,সাপাহার,নওগাঁ বৃহস্পতিবার ১২:৪১, ১৯ মে, ২০২২
বৃষ্টির পানি ও উজানে ভারত হতে নেমে আসা ঢলের পানিতে সীমান্ত ঘেঁষা পুণর্ভবা নদীর পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাপাহার উপজেলার পুড়ইল বিল এলাকার কৃষককুলের শত শত বিঘা জমির বোরো ধান এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সাপাহার উপজেলার হাপানিয়া, আলাদিপুর, বেলডাঙ্গা, আন্ধার দিঘী, শ্রীধরবাটি সহ বেশ কিছু গ্রামের অসহায় কৃষকদের তলিয়ে যাওয়া ধানের জমিতে দাঁড়িয়ে বিলাপ করে কাঁদতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে বুধবার ভোরে ওই এলাকায় গেলে অসংখ্য কৃষক সাংবাদিককের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের ঘিরে ধরে তাদের মনের চাপা কান্নার কথা গুলি বলেন।
এসময় বেলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ইয়াহিয়া,জলিল ও এরশাদ আলী কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলেন, এই বিলে আমার ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগানো ছিল। কামলা সংকটের কারণে ক্ষেতের ধান কাটতে একটু দেরী হওয়ায় দু-এক দিনের মধ্যে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে, তার সহ অসংখ্য কৃষকের জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পুড়ইল বিল নামক ওই বিল থেকে কৃষকগণ একটুকুও ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেনী। যে কৃষক দু”এক বিঘা জমির ধান কেটেছিল হঠাৎ ঢলের পানিতে কাটা ধানগুলিও ভেসে চলে গেছে। তড়িৎ গতিতে বিলের পানি নেমে না গেলে কোন কৃষকই ওই মাঠ থেকে এক মন ধানও ঘরে তুলতে পারবেনা।
পাকা ধানে মই দেয়ার মত হঠাৎ ঢলের পানিতে ওই এলাকার শত শত কৃষকের সোনালী স্বপ্নগুলি এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে ক্ষেতের মধ্যে দাঁড়িয়ে কৃষকদের এমন বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।
কৃষক আব্দুল জব্বারকে তার তলিয়ে যাওয়া ক্ষেতের ধান সংগ্রহ করতে দেখা গেছে মাঠের অথৈই পানিতে। কষ্টের ঢেকুর তুলে জব্বার বললেন, আমার তো সবই গেছে এখন যা পাই তাই সংগ্রহের চেষ্টা করছি মাত্র। ওই এলকার কৃষকগন তাদের সর্বস্ব খুইয়ে এই বোরো চাষাবাদ করেছিল। বর্তমানে তারা একটুকুও ধান ঘরে তুলতে পারবেনা। ভবিষ্যতে কিভাবে তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকবে, এই চিন্তার ছাপ সকলের মুখে চোখে।
কৃষকদের মতে পুড়ইল বিলে কমপক্ষে ৫ বিঘা জমির সম্পুর্ন পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি দপ্তরের কৃষিসম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান যে তিনি সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। তার মতে ওই এলাকায় একশ বিঘা বিঘা জমির ধান সম্পুর্ন রয়েছে পানির নিচে।
পুড়ইল বিল এলাকায় ক্ষেতের ধান তলিয়ে যাওয়ায় শত শত কৃষকের গগন বিদারী আর্তনাত ও দু:চিন্তায় সেখানকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।