ঢাকা (সন্ধ্যা ৬:১৫) বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ ইং

সরকারি চাকুরিজীবিদের জন্য ২৪৭৪টি ফ্ল্যাটের উদ্বোধন

<script>” title=”<script>


<script>

সরকারি কর্মচারীদের জন্য আবাসন সংকট নিরসনে আরও ২ হাজার ৪৭৪টি ফ্ল্যাট উদ্বোধন করেছে সরকার। মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ফ্ল্যাটগুলো উদ্বোধনী করেন।

সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সংকট নিরসনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়ে থাকে। ২ হাজার ৪৭৪টি ফ্ল্যাট আজিমপুর, মতিঝিল ও মালিবাগ সরকারি কলোনিতে বহুতল ভবন নির্মাণ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য তেজগাঁওয়ে আবাসিক ভবন নির্মাণ এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য মিরপুরে আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প অন্যতম। এছড়া এ সময় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ৩০০টি ফ্ল্যাটের বরাদ্দ প্রাপকদের নিকট বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করা হয়।

একই সময় মাদারীপুর জেলা সদরের যে সকল সরকারি অফিসের নিজস্ব জমি ও অফিস ভবন নেই সে সকল অফিসের জন্য ৭০.১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০ তলা বিশিষ্ট সমন্বিত অফিস ভবন উদ্বোধন করা হয়।

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে ১৪৮ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ঢাকার মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে ১৪ তলা বিশিষ্ট পাঁচটি ভবনে মোট ৫৩৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি একটি প্রকল্প হাতে নেয়। ২ একর জমির উপর নির্মিত এসব অত্যাধুনিক ভবনে মাসিক, সাপ্তাহিক এমনকি দৈনিক ভিত্তিতে ভাড়া পরিশোধের মাধ্যমে বস্তিবাসীরা বসবাসের সুযোগ পাবে। ইতোমধ্যে ৩০০টি ফ্ল্যাট বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে এবং মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বরাদ্দ প্রাপকদের নিকট এসব ফ্ল্যাটের বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করা হয়।

মঙ্গলবার গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত ঢাকার মিরপুর, আজিমপুর, মতিঝিল ও মালিবাগে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মিত ২৪৭৪টি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাট উদ্বোধন করা হয়। যার মধ্যে ২৮৮টি ফ্ল্যাট গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের এবং৫৮টি ফ্ল্যাট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্ধারিত রয়েছে।

ঢাকার মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে ১৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি ভবনে ২৮৮ টি ফ্ল্যাট গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে । এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ১ জানুয়ারি ২০১৬ সালে আরম্ভ হয়ে যা ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হয়।

ঢাকার মালিবাগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৪৫৬টি ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট। এ প্রকল্পের আওতায় ২১২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চারতলা ভবনে এসব ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়। এসব ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ১০০০ এবং ৮০০ বর্গফুট। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় তিন তলা বিশিষ্ট একটি মসজিদ ও একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বসবাসের জন্য ৪৪ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি ভবনে নির্মাণ করা হয়েছে ৫৮টি ফ্ল্যাট। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ২০২১ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। নবনির্মিত এসব ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮০০ বর্গফুট আয়তনের ৭টি, ১৫০০ বর্গফুট আয়তনের ৭টি এবং ৮০০ বর্গফুট আয়তনের ৪৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক কার ওয়াশিং সিস্টেম।

উদ্বোধনকৃত প্রকল্প সমূহের মধ্যে খরচ ও আয়তন বিবেচনায় বৃহত্তম প্রকল্প ঢাকাস্থ আজিমপুর সরকারি কলোনির অভ্যন্তরে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় ৯৯০ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৩.৬২ একর জমিতে ১৭টি ভবনে মোট ১২৯২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। ১হাজার এবং ৮শ’ বর্গফুট আয়তনের এসব ফ্ল্যাটে রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা। এসব ভবনে রয়েছে সুপরিসর কমন স্পেসসহ একাধিক লিফট। প্রকল্প এলাকায় একটি ছয় তলা বিশিষ্ট কমন ফ্যাসিলিটিজ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

মতিঝিল সরকারি কলোনীতে (হাসপাতাল জোন স্টোর কম্পাউন্ড) বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২৫৭ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাঁচটি ভবনে নির্মাণ করা হয়েছে ৩৮০টি ফ্ল্যাট। ২০ তলা বিশিষ্ট এসব ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে চারটি করে ইউনিট এবং প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ১ হাজার এবং ৮শ বর্গফুট।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও দিকনির্দেশনায় নির্মিত এসব ভবনে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক নির্মাণসামগ্রী। জানালায় তাপ প্রতিরোধী থাই গ্লাস, উন্নত ফিটিংস ও টাইলসকৃত ফ্লোরসহ আধুনিক নির্মাণ প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে এসব ভবনে। রয়েছে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি ফায়ার এক্সিট ও সুপরিসর বারান্দা ও কমন স্পেস। প্রকল্পসমুহে নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্থাপন করা হয়েছে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি। রয়েছে রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক কার পার্কিং এর ব্যবস্থা। পরিবেশ সুরক্ষা ও মনোরম পরিবেশ নিশ্চিত করতে এসব প্রকল্প এলাকায় বৃক্ষরোপন ও জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে।

২০০৮ সালের সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ৮ শতাংশের কম আবাসনের সুবিধা ছিল। বর্তমানে ২৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে যা দেশের আবাসন খাতে উন্নয়নের একটি বড় মাইলফলক।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামীম আখতার প্রমুখ।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT