ঢাকা (বিকাল ৪:১৭) শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং

শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা, সঙ্গে ছিল সাদা পোশাকের লাঠিধারীরাও

শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা, সঙ্গে ছিল সাদা পোশাকের লাঠিধারীরাও
২ আগস্ট ২০১৮, পুলিশের সঙ্গে অপরিচিত কয়েকজন যুবক লাঠিসোট নিয়ে মিরপুর ১৩ তে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ছবি: সংগৃহীত

<script>” title=”<script>


<script>

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গতকাল (২ আগস্ট) পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবিতে দেখা যায়, পুলিশ এবং সাদা পোশাকের লাঠিধারীরা এক সঙ্গে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ছুটে আসছে।

গতকাল বিকালে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা যখন রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সের কাগজ দেখছিলো তখন পুলিশ বাঁশি বাজিয়ে তাদেরকে রাস্তা ফাঁকা করতে বলে।

এছাড়াও, এক দল যুবক মুখে কাপড় বেঁধে ও হেলমেট পড়ে সেই এলাকায় মহড়া দেয়। এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজের সামনে লাঠিসোটা নিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

এরপর, পুলিশের সহায়তায় হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করলে শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছুঁড়ে হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ফলে, পুলিশের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ধস্তাধস্তি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদের মুখে হামলাকারীরা সরে যেতে বাধ্য হয়।

এরপর, বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিরপুর-১৪ এলাকায় সমবেত হয়ে তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। পুলিশ সেসময় আবার শিশু শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে। শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মিরপুর-১৩ ও ১৪ থেকে চলে যায়।

শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের একজন শিক্ষার্থী বলে, “আমরা বিকাল ৪টার দিকে মিরপুর-১৪ তে সমবেত হয়েছিলাম। কয়েকজন পুলিশ সদস্য এবং অপরিচিত ব্যক্তি আমাদের ওপর হামলা চালায় এবং আমাদের ধাওয়া করে।”

সেই হামলার লাইভ ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওচিত্রে দেখা যায় ফুটওভার ব্রিজের সিঁড়িতে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের পুলিশ পেটাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধাওয়া খেয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা ফুটওভার ব্রিজের ওপর উঠে পড়ে। এই সময় ফুটওভার ব্রিজের দুই পাশ থেকে পুলিশ উঠে শিশু শিক্ষার্থীদের পেটাতে থাকে। পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকের লাঠিধারীরাও ছিল।

শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা, সঙ্গে ছিল সাদা পোশাকের লাঠিধারীরাওসন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশ ও সাদাপোশাকের ব্যক্তিরা এক সঙ্গে কিছু শিক্ষার্থীকে পেটাচ্ছে। ভিডিওচিত্রটি এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজের কাছ থেকে ধারণ করা হয়েছে।

সে সময় তারা এক ছাত্রীর কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়।

রাস্তার পাশের কয়েকজন হকার জানান, সেই স্থান ত্যাগ করার সময় শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।

স্থানীয়রা জানান, হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং অন্তত একজন হামলাকারী আহত হয়েছে। পুলিশের দাবি তাদেরও একজন সদস্য সেই হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন।

তবে কাফরুল থানা এ ধরনের কোন হামলার ঘটনা অস্বীকার করে।

রাতে ধানমন্ডির বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি যতদূর জানতে পেরেছি বিএনপিপন্থি কয়েকজন ছেলে সেই এলাকায় জড়ো হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উসকে দিচ্ছিল। তারপর, স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দেয়।”

এদিকে, চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একদল কর্মী বন্দরনগরীর জিইসি মোড়ে দুজন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেসময় তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের কর্মীরা বিকাল ৪টার দিকে সেই এলাকায় পৌঁছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দুই শিক্ষার্থী তাসমিয়া আফরোজ তৃষা এবং মারিফুল হাসান বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের দুজনের কাছ থেকে দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়েছে।

ছাত্রলীগের লোকেরা দুজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছে বলেও জানান তারা। তৃষা বলেন, “সে সময় ছবি তুলতে গেলে হঠাৎ ছাত্রলীগের দুজন ব্যক্তি আমাদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।”

অপর একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা মোহাম্মদ আলম নামের এক ব্যক্তিকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। তারা আটক ব্যক্তিকে জামাত-শিবির কর্মী বলে জানায়।

নগরীর পাঁচলাইশ জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার দেবদূত মজুমদার বলেন, তিনি এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা জানতে পারেননি।

গতকাল বিকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও স্থানীয় কয়েকটি স্কুল-কলেজের ৫০০ বেশি শিক্ষার্থী ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দুই ঘণ্টার জন্যে অবরোধ করে রাখে।

তারা যখন গাড়ির চালকদের লাইসেন্স দেখছিলো সেসময় জাবি শাখার ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী বিক্ষোভকারীদের সেই স্থান ত্যাগ করতে বলে। সেসময় তারা হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়।

কিন্তু, ছাত্রলীগের জাবি সভাপতি জুয়েল রানা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন হামলাকারীরা ছাত্রলীগের কর্মী নয়।

কুমিল্লায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো দখলে রাখে এবং বিভিন্নস্থানে শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT