রাজবাড়ীতে ধসে পড়ল নির্মাণাধীন সেতু
মেঘনা নিউজ ডেস্ক শনিবার সকাল ১০:৩৮, ১০ জুন, ২০২৩
রাজবাড়ীতে নির্মাণকাজ চলমান অবস্থায় ধসে পড়েছে একটি সেতু। জেলার পাংশা উপজেলার মাছপাড়া-বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী মেঘনা গ্রামের আঞ্চলিক সড়কে এ নির্মাণাধীন সেতুটি ধসে পড়ে। সেতু ধসে পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো অন্যায় হয়নি বলে দাবি করেন পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হাসান।
স্থানীয়রা জানান, কাজ চলমান থাকাকালীন রাতে সেতুর ঢালাই করার সময় ধসে পড়ে। তবে এ সময় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্টদের অবহেলা ও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় সেতুটি ধসে গেছে। এদিকে সেতুটি ধসে পড়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ আরও দীর্ঘস্থায়ী হলো। স্থানীয় বাসিন্দা রহমান বলেন, ব্রিজটির কাজ শুরু হয় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। আমরা স্থানীয়রা ইঞ্জিনিয়ারকে বারবার বলার পরেও কোনো প্রতিকার পাইনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক চায়ের দোকানদার বলেন, আমরা ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের বলেছি নিম্ন মানের কাজ হচ্ছে। সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজ এমন ঘটনা ঘটেছে। পথচারী নারীর মন্তব্য, ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য সরকার টাকা কম দেয়নি। তাহলে ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা কেন নিম্ন মানের জিনিস দিয়ে কাজ করল। এদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। এদের শাস্তি দেখে অন্যরা অন্যায় করার আগে চিন্তা করবে।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি হাজী দুলাল বলেন, আমি এই ব্রিজের ঠিকাদার না। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সাব ঠিকাদার। এই ব্রিজের বিভিন্ন উপকরণ ক্রয় করে পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন। তবে মূল ঠিকাদার সাবেক নৌ মন্ত্রীর ভাই। তিনি আরও বলেন, রাতে ঢালাইয়ের সময় আমি ওখানে উপস্থিত হলে স্থানীয় জনগণ আমাকে ধাওয়া করে। তারা আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন বলেন, আমি কোনো ঠিকাদার না। ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায় সার্বিক এন্টারপ্রাইজ কনস্ট্রাকশন। মূলত সাব ঠিকাদার হাজী দুলাল। পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাছপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো বলেন, ব্রিজ ধসে পড়ে নাই। ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। স্টেজিং ভালো না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। নিচের গোড়াটা যেভাবে করার দরকার ছিল সেভাবে হয়নি বিধায় এমনটা হয়েছে। তা ছাড়া রড, সিমেন্ট, বালু সবই ঠিক আছে।
এলজিইডির পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হাসান বলেন, স্টেজিং ভালো না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা সব সময় তদারকি করেছি। এটি একটি দুর্ঘটনা। এখানে আমার বা ঠিকাদারের কোনো দায় নেই।
তিনি আরও বলেন, ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির কাজ পায় ফরিদপুরের একজন ঠিকাদার। দুই মাস আগে কাজটি শুরু হয়। আমি যতটুকু জানি হাজী দুলাল ও ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন সাব ঠিকাদার। তারা যৌথভাবে কাজটি করছে। যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় আবার নতুন করে কাজ করবে ঠিকাদার। এর জন্য নতুন করে কোনো বরাদ্দের সুযোগ নেই।