মৌলভীবাজারে পরকীয়ার জেরে ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন
নিজস্ব প্রতিনিধি শনিবার রাত ১১:০৭, ২ মে, ২০২০
মোঃ জাকির হোসেন জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার সদর উপজলোর গিয়াসনগর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বানিকা (আনিকেলীবড়) এলাকায় বাড়ি থেকে নিখোঁজের একদিন পর খাল থেকে মেরাজ মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ মে) বিকেলে মরদেহটি উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর থানা পুলিশ । মরদেহ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মেরাজ মিয়াকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ভাবির সঙ্গে পরকীয়ার কারণে বড় ভাই মেরাজ মিয়াকে পথের কাটা মনে করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সন্দেহ জনক ভাবে ছোট ভাই বদরুল মিয়া (২৯)। আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আনিকেলীবড় গ্রামের মেরাজ মিয়া নিজ ঘরে ইফতার করে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। এরপর এলাকাবাসী শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে খালের মধ্যে মেরাজের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মেরাজের মরদেহ উদ্ধার করে।
এরপর প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিহত মেরাজের ছোট ভাই বদরুল মিয়াকে সন্দেহ করে এবং জানতে পারে তিন দিন আগে নিহতের স্ত্রী ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। মেরাজের এক ছেলে (৫) এবং এক মেয়ে (৮) রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বদরুল মিয়াকে থানায় নিয়ে যান এবং নানা কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন। প্রথম দিকে বদরুল মিয়া কিছু স্বীকার না করে কীভাবে কি হয়েছে তা আল্লাহ জানেন বলে এড়িয়ে যেতে চাইলেও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার রহস্য বেড়িয়ে আসে।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদের কারণে এক সময় সে তার বড় ভাই কে হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করে ফেলে এবং আমরা জানতে পারি সে হত্যা করেছে। তার ভাবির সঙ্গে বদরুলের দীর্ঘদিনের অবৈধ পরকীয়া সম্পর্ক ছিল।বদরুল বলে তারা দুজনে কোরআন সাক্ষী রেখে নিজেরা নিজেরা প্রায় দুই বছর আগে বিয়েও করেছে । কয়েক দিন আগে পরকীয়ার বিষয়টি বড় ভাই মেরাজ জানতে পারলে তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রচুর ঝগড়া হয়। তিনদিন আগে তার স্ত্রী ছেলে-মেয়ে নিয়ে শ্রীমঙল উপজেলার আশিদ্রোন গ্রামে তার বাবার বাড়ি চলে যান। এতে বদরুল আরো বেশী ক্ষুব্ধ হয়ে বড় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার ইফতারের পর মেরাজ মিয়া বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারে ঘুরতে গেলে ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থান নেয় বদরুল এবং রাত ১০টার দিকে যখন বড় ভাই মেরাজ বাজার থেকে ফিরছিলেন বদরুল তখন প্রথমে সরাসরি লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে মেরাজ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পর পর আরও আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়িতে চলে যায়।তাহারা ভাই ভাই সবাই আলাদা আলাদা থাকেন ঘরে স্ত্রী না থাকায় তাই সে রাতে কেউ আর মেরাজের খোঁজ খবর নেয়নি । পরদিন বিকেলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
বদরুল মিয়া বলে । বড় ভাই ভাবির সঙ্গে ঝগড়া করার কারণে ভাবি বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ায় পথের কাটা হিসেবে ভাইকে সরিয়ে দেয়ার জন্য সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।