মুজাফফর আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু : নতুন কমিটিতে আবারো এলাকাবাসী দেখতে চায় মোঃ নূরুল আমিন সাহেবকে।
মেঘনা নিউজ ডেস্ক শুক্রবার বিকেল ০৫:০৬, ২০ জুলাই, ২০১৮
মেঘনা উপজেলা সৃষ্টির আগে অবহেলিত মেঘনায় এলাকার ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার জন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান তেমন একটা গড়ে উঠেনি।
এলাকায় হাতেগোনা পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে কান্দারগাঁও মুজাফফর আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ অন্যতম।
একটা সময় ছিল পরীক্ষার রেজাল্ট, স্কুলের নিয়ম-কানুন, শিক্ষার মান, পরিবেশ, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এবং দিগন্ত জোড়া বিস্তৃর্ণ মনোরম খেলার মাঠের কারনে প্রতিষ্ঠার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই স্কুলটি সমগ্র কুমিল্লা জেলার মধ্যে একটি আদর্শ স্কুল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
প্রতিষ্ঠার শুরুতে স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা জনাব মুজাফফর আলী সাহেবের সুযোগ্য নেতৃত্বে কান্দারগাঁও, তুলাতুলি, সোনাকান্দা, হরিপুর, বড়কান্দা সহ আশপাশের গ্রামের অত্যন্ত সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে স্কুলটি পরিচালিত হয়।
প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে তারা এখন সকলেই প্রয়াত।
স্বাভাবিক নিয়মে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে প্রতিষ্ঠাদের মধ্যে আর কেউ না থাকার কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক, গ্রুপিং, লবিং ও পেশী শক্তির ছত্র ছায়ায় অনেক শুধু অযোগ্য নয়, অনেক চিহ্নিত প্রশ্নবিদ্ধ বিতর্কিত লোকও স্কুল কমিটিতে ঢুকে পরে। ফলে যা হবার তাই হয়েছে দিন দিন স্কুলের লেখাপড়ার মান নিচে নামতে নামতে তলানিতে এসে ঠেকেছে।
এমতাবস্থায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ অলংকৃত করলেন আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব সফিকুল আলম। একই সঙ্গে কান্দারগাঁও গ্রামের মেধাবী ছাত্র, তারুন্য ও আধুনিকতার সমন্বয়ে গড়ে উঠা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান এবং আমাদের সকলের প্রিয় সৎ, যোগ্য,অত্যন্ত সাহসী, প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর চোর ও দুর্নীতিবাজদের আতংক মোঃ নূরুল আমিন সাহেব একই সঙ্গে এলাকার আরও কিছু গন্যমান্য লোকজন। সবাই ভেবেছিল তাদের নেতৃত্বে স্কুলের পড়ালেখার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি স্কুলের হারিয়ে যাওয়া ভাব-মূর্তি পূণরুদ্ধার হবে।
কিন্তু বিধিবাম, ঘরের ইঁদুরে বেড়া কাটলে সে বেড়া নাকি জোড়া তালি দিয়েও কাজ হয়না।
এই স্কুলটির ক্ষেত্রে এটি বাস্তবিক ভাবে ফুটে উঠেছে। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জনাব আঃ রউফ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কতিপয় সদস্য ও কিছু অসাধু শিক্ষকের সমন্বয়ে গড়ে উঠা একটি দুষ্ট চক্রের মাধ্যমে স্কুলটিতে চুরি-দুর্নীতি, কোচিং বাণিজ্যসহ আরও নানা ধরনের অনিয়মের মাধ্যমে স্কুলটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।
স্বাভাবিক ভাবেই যে স্কুলের অধ্যক্ষ, পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং শিক্ষকরাও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে সে স্কুলের ধ্বংস অনিবার্য।
ফলে স্কুলটিতে শিক্ষার মান ও পরিবেশ না থাকার কারণে ইতোমধ্যে যাদের সামর্থ আছে বা সম্ভব হয়েছে তা পার্শ্ববর্তী বা দূরের স্কুল গুলোতে গিয়ে লেখাপড়া করছে। আর যাদের সাধ্য নেই তারা এই স্কুলটিতে বাধ্য হয়েই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে।
এমতাবস্থায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য কান্দারগাঁও গ্রামের মোহাম্মদ নূরুজ্জামানসহ আরও কতিপয় সদস্য চুরি, লুটপাট ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বাধা প্রধান করলেও সবচেয়ে বেশি সরব ও সাহসী প্রতিবাদী হিসেবে সোচ্চার ছিলেন সোনাকান্দার গ্রামের মোঃ নূরুল আমিন সাহেব।নূরুল আমিন সাহেবের একান্ত নিরলস প্রচেষ্টা, আন্তরিকতা ও সাহসের কারণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া লুটপাটের কিছু অংশ অর্থাৎ ৫,০০০/-(পাঁচ হাজার টাকা) করে শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে বাধ্য হয় অধ্যক্ষ আঃ রউফ। কথায় আছে Morning shows the day.কালের সূর্য বলে দেয় দিনটা কেমন যাবে।৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা ফেরত দেয়ার ব্যাপারটা বড় ধরনের কোনো বিষয় না হলেও এটাকে ইস্যু করে দুর্নীতি ও লুটপাটের তদন্ত করলে আমরা আশা করতে পারি কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে। তবে উল্লেখ্য যে, শিক্ষার্থীদের জোর দাবির ফলে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নামমাত্র অডিটে মিলেনি কোন অনিয়মের তথ্য। তবে এলাকাবাসী মনে করেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা যদি নূরুল আমিন সাহেবকে সহায়তা করত, বাধা না দিত তাহলে আজ সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রথম শ্রেণীর দুর্নীতিমুক্ত স্কুল হতো কান্দারগাঁও মুজাফফর আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।
যাই হোক, আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়েই মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যদের মেয়াদ। স্বাভাবিক নিয়মেই আবার নতুন কমিটি হবে। এমতাবস্থায় এলাকাবাসীর সঙ্গে নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা বলে জানা গেছে তারা সকলেই চাইছেন এবারও যেন মোঃ নূরুল আমিন সাহেব পরিচালনা কমিটিতে থেকে স্কুলের চুরি-দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রাখার সুযোগ পায়।
এখন আমরা এমন একটা সমাজ ও পরিস্থিতিতে বাস করছি যে শত অন্যায়-অনিয়ম দেখলেও মানুষ প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করে না। সেখানে নূরুল আমিন সাহেব নিজের উপর অনেক হুমকি-ধামকি ও চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে স্কুলের স্বার্থের ব্যাপারে ইস্পাত কঠিন দৃঢ়মনোবল নিয়ে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাই সকলের উচিত এ ধরনের মানুষদের যথাযথ মূল্যায়ন করে উৎসাহিত করলে মানুষ সত্য বলতে ও ভাল কাজ করতে ও প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসবেন।