ঢাকা (রাত ১১:১১) শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
শিরোনাম

ভোলায় জেলেদের জালে শীতের মৌসুমেও ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ



কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে জেলেদের জালে শীতের মৌসুমেও ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ
মাছ জেলেদের নদীতে গিয়ে এখন আর খালি হাতে ফিরতে হয় না, যেটুকু ইলিশ মিলছে তা নিয়ে মোটামুটি সবাই সন্তুষ্ট। কারণ, বিগত সময়ে শীতকালে মাছের দেখা পাওয়াই দুষ্কর ছিল। সারাদিন জাল বেয়ে যা পাচ্ছি তা দিয়ে চলে যাচ্ছে। বেকার তো আর বসে নেই। এমনটাই বলছেন জেলে পরিবারগুলো। ভোলা জেলার দক্ষিণ আইচা থানার ঢালচর এলাকার জসিম জানান,নদীতে ভাল ইলিশ মাছ পড়ছে,বেচা বিক্রিও ভাল। মাছ ধরতে গিয়ে তেলের খরচসহ দেড় হাজার টাকা ব্যয় হলেও সবমিলিয়ে লাভও ভাল।এদিকে শীতের মৌসুমে ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে সরগরম রয়েছে মৎস্য আড়ৎগুলো।জেলে, পাইকার আর আড়ৎদারদের হাকডাকে মুখরিত। ব্যস্ততা বেড়েছে জেলে পাড়ায়।ভোলা বৃহৎ মৎস্য আড়ত চডার মাথা, বিশ্বরোড ঘাট, সামরাজ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সরগরম মাছের আড়ত। সেখানে মৎসজীবীদের ভিড়। ঘাটে ট্রলার ভিড়ছে। মাছ তুলে আড়তগুলোতে এনেই ডাক দেওয়া হচ্ছে। তারপর বরফজাত করে ঝুড়িতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। মোকামে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে ঘাট থেকেই।বকসি এলাকার আড়ৎদার কামরুল বলেন, নদীতে ভালোই মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এতোদিন জেলেরা কষ্টে দিন কাটিয়েছিলাম। এবার খরচ পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো বলে মনে হয়। সামরাজ মৎস্য ঘাটের আড়তদার সুলতান বলেন, নদীতে বড় ও মাঝারি সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে কর্মব্যস্ত মৎস্যজীবীরা। বড় সাইজের হালি প্রতি ইলিশ তিন হাজার, মাঝারি সাইজ দুই হাজার এবং ছোট সাইজ বিক্রি হচ্ছে ১৩শ’ টাকা দরে। তবে জাটকাও মিলছে কিছু কিছু। বিশ্বরোড ঘাটের আড়ৎদার আমজাদ মিয়া বলেন, মাছের মৌসুমে প্রতিদিন ৫/৬ এমনকি ১০ ঝুড়িও ইলিশ মোকামে পাঠানো হতো। এখন পাঠানো হচ্ছে ৩/৪ ঝুড়ি। ভোর থেকেই জমজমাট মাছের আড়তগুলো। আড়ৎদার আ.মান্নান বলেন, অসময়ে ইলিশ ধরার কারণ হিসেবে অনেকেই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ বলে মনে করছেন। যে কারণে ইলিশের সময়সীমা পরিবর্তন হয়েছে। মৎস্যজীবীদের মতে ইলিশের
ভরা মৌসুমে ইলিশ মিলছে না তবে অন্য সময় বেশি মিলছে। মৎস্য বিভাগের হিসাবে জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু গত ৩/৪ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে আগস্ট থেকে সেপ্টম্বর বা অক্টোবর পর্যন্ত মাছ ধরা পড়ছে। কিন্তু এ বছরই দেখা গেছে ব্যতিক্রম। জানুয়ারি থেকেই মাছ ধরা পড়ছে। উপকূলীয় ঘাট ঘুরে দেখা যায়, মাছ ধরা পড়ায় কেউ বেকার বসে নেই, জাল ট্রলার নৌকা নিয়ে ছুটছেন নদীতে। কেউবা নৌকা মেরামত নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। জেলে পায় যেন উৎসবের আমেজ। বিগত সময় মাছের সংকটে ঋণের বোঝা নিয়ে যেসব জেলে অসহায় অবস্থায় ছিলেন তারাও ছুটছেন নদীতে। সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেই মেঘনায় নেমে পড়েছেন জেলেরা। ভোলা সদর সিনিয়র মৎস্য অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, ইলিশ অভিযান সফল হওয়ার কারণে নদীতে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। তাছাড়া এসময়ে ডিম ছাড়ার লক্ষে কিছু ইলিশ সাগরে থেকে নদীতে চলে আসে। তিনি আরও বলেন, আগে শীতের সময় নদীতে ইলিশ পাওয়া যেত না, কিন্তু এ বছর কিছুটা ব্যতিক্রম। ২০ বছর আগেও এমন সময় মাছের আমদানি বেশি ছিল। এ বছরের ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৪ হাজার মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত লাখ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT