বৃষ্টির ছোঁয়ায় আপন সৌন্দর্যে সেজেছে সিলেটের চা বাগান
আবুল কাশেম রুমন বৃহস্পতিবার সকাল ১১:২০, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
দীর্ঘ কয়েক মাস শীতের আবহাওয়া ও শুকন আদ্রতায় সিলেটের চা বাগানগুলোতে দেখা দিয়ে ছিলো পাতা শুন ও হলদে বাগান। কিন্তু বসন্তের আগমনে চা বাগান গুলোতে বৃষ্টি ছোঁয়া পেতেই ফিরে পাচ্ছে প্রাকৃতিক সবুজ সুন্দর্য। সিলেট মানেই চা বাগান, সবুজের সমারোহ। এই সবুজের টানে পর্যটকরা ছুঁটে আসেন সারাদেশ থেকে। শীতের শেষে এসেছে বসন্ত। পাতাঝরা মৌসুম শেষে প্রকৃতিতে এসেছে প্রাণের সঞ্চার। চা বাগনে এসেছে নতুন কুঁড়ি। সুবজে ছেয়ে গেছে সব দিক। এই সৌন্দর্য্যরে টানে কয়েক দিন থেকে ছুঁটে আসছেন পর্যটকরা। যারা আসছেন তারা সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে সবশেষে প্রশান্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন চা বাগানে।
সিলেট শহরের থেকে লাক্কাতুরা ও মালিনীছড়া চা বাগানের দূরত্ব মাত্র তিন কিলোমিটার। শহরের উত্তর প্রান্তে এ দুটি বাগানের অবস্থান। এ বাগান দুটি ও তার চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শকদের মনে নতুন প্রাণের স্পন্দন জোগায়। যা দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক আসেন এসব চা বাগানে। সপ্তাহের শেষে বৃহস্পতিবার এই দুটি চা বাগান ঘুরে দেখা যায় ইতিমধ্যে নতুন পাতার কুঁড়ি দিতে শুরু করেছে।
বিকেলের দিকে দেখা যায়, এই সবুজ গালিচার ছবি ফ্রেম বন্দি হতে ব্যস্ত চা বাগানে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। চা বাগানের ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় নতুন গজানো চা গাছের এই সৌন্দর্যের লীলা ভূমি দেখতে কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধু বান্ধব নিয়ে বাগানে ঘুরতে এসেছেন। আর কেউ বা চা বাগানের মধ্যে বসে ছোট ছোট টং দোকানে বসে চা পান করছেন আর বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
উঁচু নিচু টিলা সমতল যে দিকেই তাকানো যায়, শুধু সবুজ আর সবুজ দেখতে যেন শিল্পীর আল্পনায় আঁকা ছবির মতো। সিলেটের এই চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুঁটে আসেন পর্যটকরা। শুধু বাংলাদেশ নয় বাংলাদেশের বাইরে থেকে ছুঁটে আসেন পর্যটকরা এসব চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। যে দিকেই তাকানো যায় শুধু সবুজ আর সবুজ আর কচি পাতার হলুদ বরণ আবরণের স্নিগ্ধতা।
এছাড়াও সিলেট বিভাগের মধ্যে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সদর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক চা বাগান। কয়েক লাখ একর জায়গার এ চা-বাগান গুলোতে দেশের শতকরা ৯৫ ভাগ চা উৎপন্ন হয়। দেশের চাহিদা মিটিয়ে চা বিদেশে রপ্তানি হয়, আয় হয় প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। এ চা-পাতা উৎপাদিত হয় দুটি পাতা ও একটি কুঁড়ি থেকে। সাধারণত নিচু জায়গা হতে তুলনামূলক উঁচু সমতল ভূমি এবং ছোট আঁকারের টিলা ও তার পাদদেশে চা গাছ জন্মায় বেশি। চা গাছের চারা রোপণ করার প্রায় পাঁচ বছর পর থেকে উৎপাদন শুরু হয়।
দর্শনার্থীরা জানান, অনেক সময় এসব চা বাগানের ভিতরে নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তারা উধ্বর্তন প্রশাসনের প্রতি পর্যটকদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্যাম্প করার দাবি জানান।
টং দোকানির সাথে কথা বলে জানা যায়, চা বাগানে সারা বছর পর্যটক আসেন তবে সব থেকে বেশি সময় পর্যটক আসেন যখন নতুন চা পাতা গজায় তখন। আর এমনিতে আমাদের শহরের আশপাশের মানুষ প্রতি সপ্তাহেই আসেন। আর পর্যটক আসলে আমাদের বেচাকেনা ভালো হয়।