প্রেমে বিয়ের স্বামী খুঁজতে এসে পিটুনি খেয়ে হাসপাতালে তরুণী
আসাদুজ্জামান খন্দকার সোমবার বিকেল ০৪:৪৬, ৩১ জুলাই, ২০২৩
গাইবান্ধার সাদুল্লাপেুরের সাগর মিয়া (২৭) নামের যুবকের মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে নেত্রকোনার জেলার এক তরুণী (২২)। এরই একপর্যায়ে উভয়ে বিয়ে করে গাজীপুরে। এই বিয়ের ৩ বছর সংসার চলাকালে উধাও হয় প্রেমিক সাগর। অবশেষে সেই স্বামীর গ্রামের বাড়িতে ছুটে আসে মেয়েটি। এসময় শারিরীক নির্যাতনের শিকার ও বেধরক পিটুনি খেয়ে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
রোববার (৩০ জুলাই) দুপুরে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিছানায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখা যায়, নির্যাতিতা তরুণীকে। তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অঝড়ে কাঁদতে থাকে। তার মোবাইল ফোনটি কেবা কারা নিয়েছে বলে জানায় এই তরুণী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন ছাকার ছেলে সাগর মিয়ার সঙ্গে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার ঘুজিরকুনা ইউনিয়নের শালুয়াকন্দা গ্রামের তরুণীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। এরপর একে-অপরের প্রেম-ভালোবাসায় ৩ বছর আগে গাজীপুরে বিয়ে করে তারা। সেখানে দুজনে পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়ে দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিল। এরই মধ্যে প্রায় ৪ মাস আগে মেয়েটিকে রেখে সাগর মিয়া উধাও হয়।
দীর্ঘদিন ধরে দুজনের সাক্ষাত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গত ২৫ জুলাই বিকেলে সাগরের সন্ধানে গ্রামের বাড়ি সাদুল্লাপুরের বিষ্ণপুরে ছুটে আসে মেয়েটি। সেখানে তার শ্বশুর-শাশুরি ও ননদসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় তারা। এরপর রাত হওয়ার কারণে স্থানীয়দের সহায়তা পাশের এক বাড়িতে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া হয়। সেখানে দুইদিন অবস্থান করার পর গত ২৭ জুলাই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পরামর্শে মেয়েকে তার বাবার বাড়ি যেতে বলা হয়। তাদের কথামতে মেয়েটি বের হলে এরই মধ্যে শ্বশুর ছাকা, শাশুরি বিজলী বেগমসহ সাগরের পরিবারের আরও অনেকে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান স্থানীয়রা। এ কমপ্লেক্সে যখমী যন্ত্রণায় ৩ দিন ধরে কাতরাচ্ছে ভুক্তভোগি মেয়েটি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ৯নং ওয়ার্ড সদস্য শাহীনুর রহমান জানান, ওই ঘটনাটি তাদের জানা রয়েছে। ব্যাপারটি নিয়ে থানার ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তিনি কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা সেটি আমাদের জানা নেই।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম বলেন, এই ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি। মেয়েটি সম্ভবত হাসপাতালে রয়েছে। শুরুতে যেখানে ঘটনা (গাজীপুরে), সেখানে আইনী সহায় নিতে পারবেন মেয়েটি।