শেষ সময়ে জমে উঠেছে পৌর নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার রাত ০৯:৫৬, ১১ অক্টোবর, ২০১৯
দীর্ঘ ৯বছর পর ১৪ অক্টোবর লালমোহন পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন পর ভোট হওয়ায় ভোটরদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন ভোটাররা।
কামরুজ্জামান শাহীন, ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার লালমোহন পৌরসভার নির্বাচন আর মাত্র দুইদিন পরে ১৪ অক্টোবর ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেষ সময়ে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ। প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দিন-রাত চলছে প্রচার-প্রচারণা, উঠান বৈঠক আর সভা-সমাবেশ। ভোটরদের মন জয় করতে প্রার্থীরা দিয়ে যাচ্ছেন নানা প্রতিশ্রতি।
দীর্ঘ ৯বছর পর ১৪ অক্টোবর লালমোহন পৌরসভার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন পর ভোট হওয়ায় ভোটরদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন ভোটাররা।
এদিকে, পুরো লালমোহন পৌর এলাকায় অলি-গলি ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে। আর মাত্র একদিন পরেই শেষ হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা। আর তাই শেষ সময়ে ভোটারদের কাছে দৌড়ঝাঁপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রার্থীরা। ভোটকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা যেন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
অপরদিকে, ভোট নিয়ে প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও ভোটের মাঠ শান্ত রয়েছে।
এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনী মাঠে প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন।
ভোলা জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানাযায়, ১২টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত লালমোহন পৌরসভায় মোট ভোট কেন্দ্র ১২টি। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ১শ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৭ শত ৩ জন এবং নারী ভোটার ৯ হাজার ৯ শত ৯৭ জন।
নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করছেন সর্বমোট ৬২ প্রার্থী, যাদের মধ্যে মেয়র পদে দু’জন, কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।
মেয়র পদে আ’লীগ প্রার্থী ও বিএনপি উভয় দলের একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে বিএনপি’র প্রার্থীকে তেমন একটা মাঠে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি বিএনপি’র কোন পোষ্টার চোখে পরার মত।
বিএনপি’র সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সোহেল আজিজ শাহিন অভিযোগ করে এই প্রতিনিধিকে বলেন, ভোটের মাঠ ভালো রয়েছে। জনগণও ভোটের অপেক্ষায় আছে। শুধু সুষ্ট পরিবেশে নেই।
প্রতিপক্ষের আ’লীগের মেয়র প্রার্থীর কর্মীরা কোথাও বিএনপি’র পোষ্ঠাল লাগাতে দেয়নি, প্রচার প্রচারনা চালাতে দিচ্ছে না। প্রতিদিন হুমকি ধামকি দিয়ে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ভোট কেন্দ্র যেতে নিষেধ কর দিচ্ছে। সুষ্ট ভোট হলে ধানের শীষ বিজয়ী হবে। এ বিষয়ে রির্টানিং অফিসারকে অভিযোগ করা হয়েছে। কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন লালমোহন আ’লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন।
তিনি বলেন, লালমোহনে ভোটের পরিবেশ বিগত সময়ের চেয়ে অনেক শান্ত রয়েছে। আমাদের কোনো কর্মী কাউকে হুমকি দেয়নি বরং আমরা প্রতিপক্ষদের সহযোগিতা করছি।
এমদাদুল ইসলাম তুহিন আরও বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। বিজয়ী হলে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবো এবং স্টেডিয়াম নির্মাণসহ সব অবকাঠামোর উন্নয়ন করবো।
লালমোহন পৌর ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জসিম উদ্দি ইকবাল বলেন, ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি সুষ্টু ভোট হলে বিজয় হবো। বিজয়ী হতে পারলে ৩নং ওয়ার্ডেকে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত করে একটি মডেল ওয়ার্ডে পরিণত করবো।
এছাড়া, লালমোহন পৌর ৯ নং ওয়ার্ডের একমাত্র নারী প্রার্থী সালমা জাহান বুলু এই প্রতিনিধিকে বলেন, কাউন্সিলর পদে একমাত্র নারী প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।
বিজয়ী হলে নারী অধিকার, নারী শিক্ষার উন্নয়নসহ পুরো ওয়ার্ড একটি আধুনিক ওয়ার্ডে রূপান্তর করবো। সমাজ থেকে মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে ও সন্ত্রাস নির্মূল করবো।
ভোলা জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা মোতায়েন থাকবে।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও রির্টানিং কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।